জাতি ও ধর্মীয় সংঘর্ষে গত দু'মাসের বেশি সময় ধরে জ্বলছে মণিপুর। সংঘর্ষে ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে। চারশ’র বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
Published : 29 Jun 2023, 07:00 PM
ভারতে জাতি ও ধর্মীয় সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ মণিপুরে দু'দিনের সফরে একাধিক কর্মসূচি নিয়েছেন বিরোধীদল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সফরের শুরুতেই বাধা পেলেন তিনি।
ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) শাসিত মণিপুরের পুলিশ আটকে দিয়েছে রাহুলের গাড়িবহর। বৃহস্পতিবার চূড়াচাঁদপুর যাওয়ার পথেই পুলিশ গাড়িবহর রুখে দেয়।
ইম্ফল থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে বিষ্ণুপুর এলাকার কাছে রাহুলের গাড়িবহর আটকানো হয়।
জাতিগোষ্ঠী সহিংসতাক্ষুব্ধ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এ রাজ্য। এর মধ্যে চূড়াচাঁদপুরের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এখানকার শরণার্থী শিবিরের লোকজনের সঙ্গে কথা বলতেই রাহুল সফরে গেছেন। আর তখনই তাকে বাধা দিল পুলিশ।
গত দু'মাসের বেশি সময় ধরে জ্বলছে মণিপুর। সংঘর্ষে ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে। চারশ’র বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার নাজেহাল হচ্ছে মণিপুরে শান্তি ফেরাতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও সেখানে গিয়ে ঘুরে এসেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি। মণিপুরে সহিংসতা থামছেই না।
বিবিসি জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে রাহুল গান্ধী ইম্ফল পৌঁছেই ফেইসবুকে একটি পোস্ট করে লেখেন, “শান্তি ফেরানোই এখন মূল লক্ষ্য। মণিপুর সেরে উঠছে। একসঙ্গে থাকলেই শান্তি ফিরবে।”
কিনতু এরপরই কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোপাল সাংবাদিকদের জানান, রাহুলের গাড়িবহর বিষ্ণুপুরের কাছে আটকে দিয়েছে পুলিশ।
তিনি বলেন, “পুলিশ বলেছে তারা আমাদের যেতে দিতে পারবেন না। রাহুল গান্ধীকে দেখার জন্য মানুষজন দাঁড়িয়েছিলেন। বুঝলাম না কেন পুলিশ আমাদের যেতে দিল না।”
এ ঘটনায় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে বিজেপি’র দিকে তোপ দেগে ট্যুইটে লিখেছেন, “এটা মানা যায় না, সব গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক নিয়ম ভাঙা হয়েছে। মণিপুরের শান্তি প্রয়োজন। দ্বন্দ্ব নয়।”
অন্যান্য কংগ্রেস নেতারাও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কংগ্রেস এমপি জয়রাম রমেশ বলেন, “মণিপুরে রাহুল গান্ধীর সফর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র চেতনায় উদ্বুদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী নীরব বা নিষ্ক্রিয় থাকতে পারেন, কিন্তু রাহুল গান্ধীকে কেন সমাজের সব অংশের মানুষের কথা শোনা থেকে বিরত রাখা হবে?”
তবে বিষ্ণুপুরের পুলিশ প্রধান বলরাম সিং বলেছেন, “মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি বিবেচনায় রাহুল গান্ধীর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই তার গাড়িবহর থামানো হয়েছে। সড়ক ধরে সামনে না এগিয়ে বরং হেলিকপ্টারে করে চূড়াচাঁদপুর যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
গত ৩ মে মণিপুরের আদিবাসী ছাত্র সংগঠনের এক মিছিলকে কেন্দ্র করে সহিংসতা শুরু হয়েছিল। তারপর থেকে সংখ্যাগুরু মেইতি এবং আদিবাসী কুকু সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে গোটা রাজ্য জুড়ে।