কলকাতার যাদবপুর থেকে নাগেরবাজার, অ্যাকাডেমি চত্বর থেকে শ্যামবাজার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় ছিল নারীদের প্রতিবাদের জোয়ার।
Published : 15 Aug 2024, 02:10 PM
ভারতে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আরজি কর হাসপাতালে এক শিক্ষানবীশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে নারীরা মধ্যরাতে নারী স্বাধীনতার জন্য ‘মেয়েরা রাত দখল করো’ কর্মসূচি পালনকালে ওই সরকারি হাসপাতালটিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
১৫ অগাস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়ার আগে থেকেই বুধবার গভীর রাতে কলাকাতাসহ গোটা পশ্চিমঙ্গের পথে নেমে এসেছিলেন অসংখ্য নারী। ভোর হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা ‘রাত দখল করে’ পথেই ছিলেন।
আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, কলকাতার যাদবপুর থেকে নাগেরবাজার, অ্যাকাডেমি চত্বর থেকে শ্যামবাজার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় ছিল প্রতিবাদের জোয়ার। কলকাতার বাইরে পশ্চিমবঙ্গের নানা প্রান্তেও রাতভর প্রতিবাদ হয়েছে। এর পাশাপাশি ভারতের মুম্বাই, দিল্লি ও গুয়াহাটি শহরেও নারীরা রাতে রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন।
কিন্তু নারীদের এ উত্তাল প্রতিবাদ চলাকালেই কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে হামলা চালায় একদল উচ্ছৃঙ্খল লোক।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীরা হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে।
হামলাকারীদের নিরস্ত করতে পুলিশ লাঠি চার্জ করে ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে। জবাবে হামলাকারীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হন। তারা পুলিশের দু’টি গাড়ি ভাংচুর করে ও হাসপাতলের সামনে একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মধ্যরাতের আগে নারীদের ‘রাত দখল করো’ আন্দোলনের ডাকে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। বহু মানুষ আরজি কর হাসপাতালের সামনের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড ভেঙে ৩১ বছর বয়সী নারী শিক্ষানবীস চিকিৎসককে খুনের প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করে শ্লোগান দেয়।
এরই এক পর্যায়ে একদল উচ্ছৃঙ্খল লোক হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা ও ব্যাপক ভাংচুর চালায়।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, রাত সাড়ে ১২টার দিকে আরজি করে হাসপাতালের কাছে নারীদের রাত দখলের কর্মসূচীর একটি মিছিল চলাকালে একদল লোক হাসপাতালটিতে হামলা চালান। তাদের অনেকের হাতে রড ও লাঠি ছিল বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
আরজি করের পুলিশ ফাঁড়িতেও হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়। পুলিশ প্রথমে হামলাকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে আর পেরে ওঠেনি। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে।
নামানো হয় র্যাফ। এসব বাহিনী কাঁদুনের গ্যাস ছুড়ে দাঙ্গাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় দাঙ্গাকারীরা প্রচুর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ তাদের তাড়া করে এলাকা ছাড়া করে দেয়। কিন্তু তারপরও থেমে থেমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলতে থাকে।
আরও পড়ুন:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে 'রাত দখলের আন্দোলনে' নারীরা