কারাগারে ‘সন্তোষজনক আচরণ’ করার করণে ২০২২ সালের নভেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই তিনজন সহ রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনকে মুক্তি দেয়।
Published : 03 Apr 2024, 05:14 PM
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় সাজাখাটা তিন ব্যক্তি বুধবার ভোরে ভারত থেকে শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। তারা সবাই শ্রীলঙ্কার নাগরিক এবং সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা সরকার তাদের পাসপোর্ট পাঠিয়েছে।
একদল পুলিশ ওই তিনজনকে তিরুচিরাপল্লীর একটি বিশেষ ক্যাম্প থেকে পাহারা দিয়ে চেন্নাই বিমানবন্দরে পৌঁছে দেয় বলে জানায় এনডিটিভি। ওই তিন জন হলেন মুরুগান, রবার্ট পায়াস এবং জয়াকুমার।
কারাগারে ‘সন্তোষজনক আচরণ’ করার করণে ২০২২ সালের নভেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই তিনজন সহ রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনকে মুক্তি দেয়। তামিল নাড়ু সরকার থেকেও তাদের মুক্তি দিতে সুপারিশ করা হয়েছিল। তারা প্রায় ৩২ বছর কারাভোগ করেন।
কারাগার থেকে মুক্তির পর তাদের তিরুচিরাপল্লীর ওই বিশেষ ক্যাম্পে রাখা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মুক্তি পাওয়া ছয় জনের মধ্যে মুরুগান নলিনীর স্বামী। তিন দশক আগে এলটিটিই-র যে আত্মঘাতী দলটি রাজীব গান্ধীকে হত্যা করেছিল সেই দলের একমাত্র জীবিত সদস্য নলিনী শ্রীহরণ, যিনি ভারতের নাগরিক।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাকি সবার সঙ্গে নলিনীও মুক্তি পান। বুধবার ভোরে স্বামী মুরুগানের সঙ্গে নলিনীও চেন্নাই বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন। মুরুগান টার্মিনালের ভেতর চলে যাওয়ার আগে তারা দুইজন কিছুক্ষণ পাশাপাশি বসেছিলেন বলে জানায় এনডিটিভি।
রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ২৬ জনকেই ভারতের একটি নিম্ন আদালত ফাঁসির দণ্ড দিয়েছিল। পরে ওই হত্যা মামলায় তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয় আদালত।
২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের প্রাণভিক্ষার আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট সাজা পাল্টে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেয়।
রাজীব গান্ধীর স্ত্রী সনিয়া গান্ধী ২০০০ সালে নলিনী শ্রীহরণকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন।
নলিনীকে যখন গ্রেপ্তার করা হয় তখন তিনি দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। কারাগারে তার মেয়ের জন্ম হয়। সেই মেয়ে এখন যুক্তরাজ্যে রয়েছেন এবং পেশায় একজন চিকিৎসক।
নলিনী মেয়ের কাছে যেতে এখন যুক্তরাজ্যের ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে এনডিটিভিকে জানান তার ভাই পাকিয়ানাথান। বলেন, “আমরা আশা করছি শ্রীলঙ্কা থেকে মুরুগানও ভিসা পাবেন। তারা শুধু পারিবারিকভাবে পুনর্মিলিত হতে চাইছে।”
দুই বছর আগে মুক্তি পাওয়া ছয় জনের মধ্যে একজন সান্থান। লিভারের জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। তিনিও শ্রীলঙ্কার নাগরিক ছিলেন।
ওই ছয় জনের মধ্যে প্রথম মুক্তি পান পেরারিভালান। তিনি ভারতের নাগরিক।