বিদায়ী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পদত্যাগের পর বালমোরালে পৌঁছান লিজ ট্রাস। রানি ট্রাসকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
Published : 06 Sep 2022, 05:53 PM
যুক্তরাজ্যের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পদত্যাগ করেছেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। অভিষেক হয়েছে নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের।
মঙ্গলবার ট্রাসের চেয়ে কিছুক্ষণ আগেই বালমোরাল প্রাসাদে পৌঁছান জনসন। পদত্যাগ করেই তিনি প্রাসাদ ছেড়ে যান। এর আধঘণ্টা পর সেখানে উপস্থিত হন লিজ ট্রাস।
বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, জনসনের পদত্যাগপত্র সাদরে গ্রহণ করেছেন রানি।
এরপরই লিজ ট্রাসকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রানি। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ট্রাসকে সরকার গঠনের আহ্বান জানান তিনি।
ক্ষমতা হস্তান্তরের এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে খুবই সাবধানতার সঙ্গে। যাতে কোনও প্রধানমন্ত্রী না থাকার সময়টা বেশিক্ষণ না হয়।
সাধারণত বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ আর নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া কয়েক মিনিটের ব্যাপার। তবে সেক্ষেত্রে ঐতিহ্যগত দিক থেকে এই আনুষ্ঠানিকতা বাকিংহাম প্যালেসে হওয়ায় সেখানে যেতে সময় লাগে কম।
কিন্তু এবার বারমোরাল প্রাসাদে অনুষ্ঠান হওয়ায় বরিস জনসন এবং লিজ ট্রাস দুইজনকেই বেশখানিকটা পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। তাই জনসনের পদত্যাগ এবং ট্রাসের অভিষেকের মধ্যে সময়টাও একটু বেশি লেগেছে।
লিজ ট্রাস এবং জনসন দুইজন আলাদা আলাদাভাবে বালমোরালে যান। সেখানে যাওয়ার আগে জনসন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে বিদায়ী ভাষণ দেন।
সেই ভাষণে তিনি তুলে ধরেন ব্রেক্সিট, কোভিড টিকাসহ তার সরকারের নানা সফলতা। বাদ যায়নি ইউক্রেইন প্রসঙ্গও।
ভাষণে জনসন নিজেকে একটি ‘বুস্টার রকেটের’ সঙ্গে তুলনা করেন, যে তার কাজ সমাধান করেছে। তার বক্তব্যের সময় সেখানে ছিলেন এমপি, সহযোগী এবং তার মিত্ররা। স্ত্রী ক্যারিও তার সঙ্গে ছিলেন।
বক্তব্যে জনসন বলেন, কীভাবে ব্রেক্সিট সফল করেছেন এবং দ্রুততম সময়ে ব্রিটিশ নাগরিকদের কাছে কোভিড টিকা পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। এছাড়া, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও নিজ সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন জনসন।
তবে বক্তৃতায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলতেও জনসন ভোলেননি। তিনি বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জ্বালানি সংকট দিয়ে যুক্তরাজ্যের জনগণকে ব্ল্যাকমেইল করতে পারবেন না। নতুন কনজারভেটিভ সরকার এই সংকট কাটিয়ে তুলবে।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যকে ইউক্রেইনের পাশে থাকতে হবে এবং রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। বক্তব্যে জনসন নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে সমর্থন করার কথাও বলেন।
নতুন সরকারের জন্য জোরাল সমর্থন থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সব সমস্যা উৎরে যাব এবং সব দিক থেকে শক্তিশালী হয়ে উঠব। এ কাজের জন্য লিজ ট্রাসকে সমর্থন দেওয়ার সময় এখনই।
রানির নিয়োগ পাওয়ার পর ট্রাস এরই মধ্যে বালমোরাল প্রাসাদ ছেড়েছেন। তিনি এখন তার নতুন বাসভবন এবং কর্মক্ষেত্র ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের পথে রওনা হয়েছেন।
সেখানে পৌঁছে তিনি নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রথম ভাষণ দেবেন। সরকারে থেকে কী কী করতে চান তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেবেন ট্রাস।