‘দ্য ল অন কমব্যাটিং প্রস্টিটিউশন এবং হোমোসেক্সুয়ালিটি’- আইনে সমলিঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে অন্তত ১০ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
Published : 28 Apr 2024, 10:24 PM
সমলিঙ্গে সম্পর্ককে অপরাধ গণ্য করে শনিবার ইরাকের পার্লামেন্টে একটি আইন পাস হয়েছে। যেখানে সাজা হিসেবে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
বলা হয়েছে, ধর্মীয় মূল্যবোধকে সম্মুন্নত রাখাই এই আইনের লক্ষ্য। পাস হওয়া আইনের একটি অনুলিপি দেখছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। যেখানে বলা হয়েছে, “এই আইনের লক্ষ্য ইরাকের সমাজ ব্যবস্থাকে নৈতিক অবক্ষয় এবং সমকামিতার আহ্বান থেকে রক্ষা করা। যা আজ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে গেছে।”
পার্লামেন্টে রক্ষণশীল শিয়া মুসলমানদের বিভিন্ন দল মূলত এই আইনের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ইরাকের পার্লামেন্টে তারাই সবচেয়ে বড় জোট।
ওই আইনের নাম রাখা হয়েছে ‘দ্য ল অন কমব্যাটিং প্রস্টিটিউশন এবং হোমোসেক্সুয়ালিটি’। আইনে সমলিঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে অন্তত ১০ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়াও, যারা সমকামিতা বা পতিতাবৃত্তির পক্ষে কথা বলবে বা প্রচার চলাবে তাদের জন্যও অন্তত সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজার কথা বলা হয়েছে।
যারা নিজের ‘জন্মগত লিঙ্গ’ পরিবর্তন করবে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে মেয়েলী আচরণ ও পোশাক পরিধান করবে তাদের জন্যও সাজার বিধান রাখা হয়েছে। তাদের এক থেকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হবে।
এই আইনের খসড়া যে বিলটি ইরাকের পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হয়েছিল সেখানে সমকামী ব্যক্তি এবং সমকামিতার জন্য সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। পরে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলোর প্রবল আপত্তির মুখে বিল সংশোধন করে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ডের সাজা করা হয়।
নতুন এই আইন পাস হওয়ার আগে ইরাকে সমকামিতাকে স্পষ্ট রূপে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হত না। তবে দেশটির দণ্ডবিধিতে শিথিলভাবে সংজ্ঞায়িত নৈতিকতার ধারাগুলি এলজিবিটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হত এবং এলজিবিটি সম্প্রদায়ের লোকজন সশস্ত্র গোষ্ঠী ও ব্যক্তিদের দ্বারা আক্রমণের এবং হত্যার শিকার হত।
ইরাকে নতুন এই আইনের বিষয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এলজিবিটি অধিকার প্রকল্পের উপ পরিচালক রাশা ইউনেস বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “ইরাকের পার্লামেন্টে এলজিবিটি বিরোধী আইন পাস হওয়ার মাধ্যমে দেশটিতে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের সদস্যদের অধিকার লঙ্ঘনের যে ভয়ঙ্কর রেকর্ড রয়েছে সেটিকেই বৈধতা দেওয়া হলো এবং এটা মৌলিক মানবাধিকারের উপর গুরুতর আঘাত।”
বিশ্বে ৬০টিরও বেশি দেশে সমকামিতাকে অপরাধ গণ্য করে আইন পাস হয়েছে। অন্য দিকে ১৩০টিরও বেশি দেশে সমকামিতা আইনত বৈধ।