নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।
Published : 24 May 2014, 01:38 PM
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের শপথ অনুষ্ঠানে সার্কভুক্ত সব দেশের সরকারপ্রধানদের চেয়েছিলেন বিজেপি নেতা, সেজন্য আমন্ত্রণও জানানো হয়েছিল।
তবে এক্ষেত্রে সিদ্ধান্তহীনতায় ছিলেন নওয়াজ। শনিবার তিনি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন বলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানিয়েছে।
বৈরী প্রতিবেশী দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে নওয়াজ বিভিন্ন পর্যায়ে কয়েক দফা বৈঠক করেন বলে তার উপদেষ্টা সারতাজ আজিজকে উদ্ধৃত করে দেশটির সংবাদপত্র ডন জানিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ২৬ মে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে মোদির শপথ অনুষ্ঠানে আজিজও নওয়াজের সঙ্গী হবেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তাসনিম আসলাম বলেছেন, তারা প্রধানমন্ত্রীর সফরের খুঁটিনাটি নিয়ে ভারতের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর তিনবার যুদ্ধে জড়ায়। এই প্রথম দেশ দুটির কোনো সরকার প্রধানের শপথ অনুষ্ঠানে অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন।
ভারতের পঞ্চদশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাওয়া মোদি দৃশ্যত জাতীয় নিরাপত্তার ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। তার ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পাকিস্তানের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিতে সোচ্চার।
ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনে বিশাল জয়ের পর পাকিস্তানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ম্যান্ডেট অর্জন করেছে দলটি, যা আগের প্রশাসনের পক্ষে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ ছিল না।
২০০৮ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। ধারাবাহিক বোমা হামলা ও গুলি চালিয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ১৬৬ জন মানুষকে হত্যা করে।
হামলাকারীরা পাকিস্তানের নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর দুই দেশের সম্পর্কে মারাত্মক অবনতি ঘটে।
এরপরও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের চেষ্টায় ওই পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়। কিন্তু এরপরও কাশ্মির সীমান্তে প্রায়ই দুই দেশের সেনাদের মধ্যে খণ্ড খণ্ড লড়াই চলছিল।
২০১৩ সালে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ তার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে আমন্ত্রণ জানালেও তিনি তাতে অংশ নেননি।
মোদি ও নওয়াজ দু’জনেই রাজনৈতিকভাবে রক্ষণশীল ভাবধারার। কিন্তু তারা ব্যবসাবান্ধব হিসেবে নিজেদের তুলে ধরায় ভোটের রাজনীতিতে জয়ী হন।
পাকিস্তানের অনেক নাগরিকই মোদিকে হিন্দু জাতীয়তাবাদী হিসেবে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখে থাকেন।
২০০২ সালে গুজরাটে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় হাজারেও বেশি মানুষ নিহত হন। তাদের অধিকাংশই ছিল মুসলিম।
প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মোদির বিরুদ্ধেও এই দাঙ্গা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
তবে এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছেন তিনি এবং আইনিভাবে কখনই তাকে অভিযুক্ত করা হয়নি।