যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে প্রকাশিত খসড়া চুক্তিতে আগামী বছরের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা জোরদার করার জন্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
Published : 10 Nov 2021, 07:12 PM
নথিটিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির মারাত্মক প্রভাবগুলি মোকাবেলায় ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলোকে অবশ্যই আরও বেশি সহায়তা দিতে হবে। কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে দেশগুলোর আগামী বছরের শেষ নাগাদ দীর্ঘ মেয়াদি কৌশল জমা দেওয়া উচিত বলেও এতে মন্তব্য করা হয়েছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই খসড়া চুক্তিতে প্রয়োজনের তুলনায় পদক্ষেপ কম বলে মত সমালোচকদের কিন্তু এতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার ওপর জোর দেওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন অন্যরা।
বুধবার সকালে জাতিসংঘের প্রকাশিত এই নথিটি নিয়ে আগামী তিন দিন সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো আলোচনা করবে এবং তাদের সম্মতি সাপেক্ষে এটি চূড়ান্ত হবে।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছেন, উষ্ণতা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক কার্বন নিঃসণ ৪৫ শতাংশ হ্রাস করতে হবে আর ২০৫০ সালের মধ্যে সামগ্রিকভাবে শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। এমনটি করা না গেলে জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব দেখা দিতে শুরু করবে।
প্রাক-২০৩০ লক্ষ্যকে সামনে রেখে আগামী বছরের কপ সম্মেলন থেকে শুরু করে প্রতি বছর মন্ত্রী পর্যায়ের শীর্ষ বৈঠক করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে এই খসড়া নথিতে। আগামী বছরের জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন মিশরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
২০৩০ এর লক্ষ্যটির গুরুত্ব তুলে ধরে নথিটিতে উদ্যোগগুলো কীভাবে রূপায়িত হচ্ছে তা বিবেচনা করতে ২০২৩ সালে বিশ্ব নেতাদের বৈঠকে ডাকার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে বলা হয়েছে।
ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়টি উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। নথিতে এই বিষয়টিও রাখা হয়েছে। ধনী দেশগুলোকে তাদের পদক্ষেপ বাড়ানোর জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে এবং দরিদ্র দেশগুলো আর্থিক ক্ষতিপূরণসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
কিন্তু জলবায়ু আন্দোলনকারীরা নথিটির এই অংশটিকে দুর্বল অভিহিত করে এটি ‘আমলাতান্ত্রিক প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার জন্য’ রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।
নথিতে ধাপে ধাপে কয়লার ব্যবহার বন্ধ ও জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করার জন্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, কিন্তু এই ইস্যুতে কোনো নির্দিষ্ট তারিখ বা লক্ষ্য বেধে দেওয়া হয়নি।
পরিবেশ আন্দোলনকারী গোষ্ঠী গ্রিনপিস এই নথিটিকে জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় ‘অপর্যাপ্ত সাড়া’ মন্তব্য করে খারিজ করে দিয়েছে। এটিকে ‘বিনীত অনুরোধ জানিয়ে দেশগুলোকে হয়তো, সম্ভবত, আগামী বছর আরেকটু বেশি করুন’ ধরনের বলে অভিহিত করেছে তারা।