তালেবানের কাবুলে অধিকারের দাবি নিয়ে রাস্তায় নারীরা

আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া তালেবানের সরকার গঠনের ঘোষণার আগে রাজধানী কাবুলের রাস্তায় নারীদের বিক্ষোভের খবর এসেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2021, 02:38 PM
Updated : 14 Sept 2021, 04:53 AM

শুক্রবার কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে নারী অধিকার এবং সামাজিক আন্দোলনের কর্মীদের বিক্ষোভের ছবিও প্রকাশ করেছে রয়টার্স।

ইউরোনিউজের খবরে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষার অধিকার এবং গত দুই দশকে নারীর অগ্রগতিকে ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছে তালেবানের প্রতি। 

তাদের দাবি ছিল, আফগানিস্তানে নারীদের কথাও শুনতে হবে, দেশের ভবিষ্যত নির্ধারণে তাদেরও সরকারে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।

তালেবান দেশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর পশ্চিমা দেশগুলো যেভাবে দ্রুত আফগানিস্তান ত্যাগ করেছে, তারও সমালোচনা করেছেন বিক্ষোভকারীরা।

তাদের বক্তব্য, আফগানিস্তান ছাড়ার আগে পশ্চিমা শক্তিগুলোর এটা নিশ্চিত করা উচিত ছিল, তালেবানের অধীনে নারীদের অধিকার রক্ষা করা হবে।

২০ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রদের আফগানিস্তান ত্যাগের প্রস্তুতির মধ্যেই গত ১৫ অগাস্ট কাবুলের দখল নেয় তালেবান যোদ্ধারা। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা তাদের সেনাবাহিনীকে ৩১ অগাস্টের মধ্যে সেখা থেকে সরিয়ে নেয়। 

বিবিসি লিখেছে, তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই তাদের অধীনে নারীদের ভবিষ্যত নিয়ে তৈরি হয় উদ্বেগ, আতঙ্ক।

আর সেই উদ্বেগ যে ভুল ছিল না, তা উঠে এসেছে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে যেখানে নারীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ আর অধিকার লঙ্ঘনের বেশ কিছু ঘটনার কথা বলা হয়েছে। 

দেশটির নারী রাজনীতিবিদদের অনেকে ইতোমধ্যে দেশ ছেড়েছেন।  নারী ক্রীড়াবিদ, অভিনয় শিল্পী, সাংবাদিক, অধিকারকর্মীদের অনেকেই আছেন আত্মগোপনে।

এমনকি আগের সরকারের সময় বিচারকের ভূমিকায় থাকা নারীদেরও এখন পালিয়ে থাকার খবর আসছে, কারণ যাদের তারা শাস্তি দিয়েছিলেন, তারা এখন সেই বিচারকদের খুঁজছে।  

১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তালেবান শাসনামলে মেয়েদের শিক্ষা বা চাকরির ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। পুরুষের লিখিত অনুমতি নিয়ে সর্বাঙ্গ ঢাকা বোরখা পরে, তবেই নারীরা ঘরের বাইরে যেতে পারত।

শরিয়া আইনের নামে দোররা বা চাবুক মারা, হাত-পা কেটে নেওয়া এবং প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝোলানো বা পাথর ছুড়ে হত্যার মত শাস্তি ছিল সেসব দিনের নিয়মিত ঘটনা।

দুই দশক পর আবারও আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তালেবান বলেছে, তাদের শাসনে নারীরা স্বাধীনতা পাবে ‘শরিয়া আইন অনুযায়ী’। তবে তার ধরণ কেমন হবে, তা এখনও তারা স্পষ্ট করেনি।

বিবিসি লিখেছে, গত মাসে আফগান নারীদের ‘নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই’ ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছিল তালেবান, কারণ নারীদের সাথে ‘কেমন আচরণ করতে হবে’, তালেবানের অনেক তরুণ সদস্য এখনও সে বিষয়ে ‘প্রশিক্ষণ’ পায়নি।