নাতাঞ্জে নাশকতা: ‘দায়ীকে’ শনাক্তের দাবি ইরানি গণমাধ্যমের

ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করে বলেছে, সে নাতাঞ্জ পরামাণবিক কেন্দ্রে সাম্প্রতিক বিস্ফোরণের জন্য দায়ী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2021, 12:00 PM
Updated : 17 April 2021, 12:01 PM

“রেজা কারিমি, এই নাশকতা সংঘটনকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে,” শনিবার বলেছে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন। 

গত রোববারের ওই বিস্ফোরণের আগে তিনি ইরান থেকে পালিয়ে যান বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমটি।

“তাকে গ্রেপ্তার ও দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় এবং আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে,” বলেছে টেলিভিশনটি।

বিস্ফোরণে পারমাণবিক কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আর তাতে নাতাঞ্জের পুরনো আইআরওয়ান টাইপের সেন্ট্রিফিউজগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সায়ীদ খতিবজাদেহ। এই নাশকতার জন্য প্রধান আঞ্চলিক শত্রু ইসরায়েলকে দায় দিয়ে এ ‘পারমাণবিক সন্ত্রাসবাদের’প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে ইরান।

এর আগে গত সোমবার ইরানের আধা-স্বায়ত্তশাসিত নূরনিউজ ওয়েবসাইট জানিয়েছিল, ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রটির একটি উৎপাদন কক্ষে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য দায়ী ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে।

“এই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে,” ওই ব্যক্তির বিষয়ে বিস্তারিত না জানিয়ে তখন বলেছিল ওয়েবসাইটটি।

শুক্রবার ইরান জানায়, তাদের নাতাঞ্জ পরমাণু কেন্দ্রে ‘ইসরায়েলের গুপ্ত হামলার’ জবাব দিতে তারা পরমাণু সমৃদ্ধকরণ ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নিত করেছে।

ইরানের শীর্ষ পারমাণবিক কর্মকর্তা আলী আকবর সালেহি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক ভাষণে বলেন, ‘‘আমরা প্রতি ঘণ্টায় নয় গ্রাম করে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করছি।”

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, এর মাধ্যমে দেশটি পারমাণবিক বোমা বানানোর পথে আরেকটু এগিয়ে যাবে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

২০১৫ সালে নিজেদের পরমাণু কার্যক্রম সীমিত করার বিনিময়ে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া শর্তে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে একটি চুক্তিতে উপনীত হয় ইরান, যেটি ‘ইরান পরমাণু চুক্তি’ নামে পরিচিত।

কিন্তু তিন বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে তার দেশকে সরিয়ে নেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চুক্তির সব শর্ত তেহরানের কঠোরভাবে অনুসরণ করার সাপেক্ষে পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তিতে ফিরিয়ে আনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

এ পরমাণু চুক্তি অনুসরণ করলে বিভিন্ন শর্তের বেড়াজালে তেহরানের পক্ষে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা কঠিন হয়ে যাবে।

এদিকে, ইরানের নাতাঞ্জ পরমাণুক্ষেত্রে হামলার বিষয়ে ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেনি। তবে দেশটির কয়েকটি সংবাদমাধ্যম নাম প্রকাশ না করে গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ নাতাঞ্জ পরমাণুক্ষেত্রে ওই হামলা চালিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ইসরায়েলের হাতে পরমাণু ‍অস্ত্র আছে বলে বিশ্বাস করা হয়।