ইরানের নাতাঞ্জ পরমাণুক্ষেত্রে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু

নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনায় বিস্ফোরণের কয়েকদিন পর ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করেছে ইরান।

>>রয়টার্স
Published : 16 April 2021, 04:44 PM
Updated : 16 April 2021, 04:44 PM

ইরানের প্রধান পরমাণু কর্মকর্তা আলি আকবর সালেহি শুক্রবার একথা জানিয়েছেন। নাতাঞ্জে ঘটা ওই বিস্ফোরণের জন্য ইরান ইসরায়েলকে দায়ী করেছে।

ইরানের আনবিক শক্তি কেন্দ্রের প্রধান সালেহি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক ভাষণে বলেছেন, ‘‘আমরা প্রতি ঘণ্টায় নয় গ্রাম করে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করছি।”

“কিন্তু আমাদেরকে অবশ্যই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে...প্রতিঘণ্টায় উৎপাদন পাঁচ গ্রামে নামিয়ে আনতে হবে। তারপর আমরা একসঙ্গে ২০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামও উৎপাদন করব।”

সালেহির ঘোষণার আগে ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কালিবাফ এক টুইটে বলেন, স্থানীয় সময় শুক্রবার প্রথম প্রহরের দিকে (রাত ১২:৪০ মিনিট) ইরানের বিজ্ঞানীরা সফলভাবে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন।”

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইরানের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘ইরান খুব সামান্য পরিমাণে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইরেনিয়াম উৎপাদন করবে।”

ভিয়েনায় জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ এখনই ইরানের এ ঘোষণার বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

ইরান বলেছে, তাদের নাতাঞ্জ পরমাণু ক্ষেত্রে গত রোববার ‘ইসরায়েলের গুপ্ত হামলার’ জবাব দিতে তারা পরমাণু সমৃদ্ধকরণ ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নিত করেছে।

ইরানের এই সিদ্ধান্ত ভিয়েনায় ‘ইরান পরমাণু চুক্তি’ নিয়ে চলমান আলোচনায় তেহরানের দরকষাকষির সুযোগ আরও বাড়াবে বলে মনে করছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।

২০১৫ সালে বিশ্বশক্তির সঙ্গে নিজেদের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে একটি চুক্তিতে উপনীত হয় ইরান, যেটি ‘ইরান পরমাণু চুক্তি’ নামে পরিচিত।

কিন্তু তিন বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে সরে যান। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চুক্তির সব শর্ত কঠোরভাবে অনুসরণ করার সাপেক্ষে পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তিতে ফিরিয়ে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

ইরান পরমাণু চুক্তি অনুসরণ করলে তেহরানের পক্ষে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা কঠিন হয়ে যাবে। পর্যায়ক্রমে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার শর্তে ইরান ওই চুক্তি অনুসরণ করতে রাজি হয়েছিল।

এদিকে, ইরানের নাতাঞ্জ পরমাণুক্ষেত্রে হামলার বিষয়ে ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেনি। তবে দেশটির কয়েকটি সংবাদমাধ্যম নাম প্রকাশ না করে গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ নাতাঞ্জ পরমাণুক্ষেত্রে ওই হামলা চালিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ইসরায়েলের হাতে পরমাণু ‍অস্ত্র আছে বলে বিশ্বাস করা হয়।