এ বছর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রেকর্ড সংখ্যক সাংবাদিককে জেলে যেতে হয়েছে। বিশেষ করে করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ে প্রকৃত তথ্য তুলে আনতে গিয়ে বা সরকারের প্রতি গণঅসন্তোষের খবর প্রকাশ করার কারণে সাংবাদিকদের প্রশাসনের বিরাগভাজন হতে হয়েছে।
Published : 15 Dec 2020, 07:28 PM
মঙ্গলবার প্রকাশিত ‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস’ (সিপিজে)-এর এক প্রতিবেদন এ তথ্য উঠে এসেছে। নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক এ সংগঠনটি নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহ করে আসছে।
সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত এবছরই সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক জেলে গেছে বলে জানিয়েছে সিপিজে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তত ২৭৪ জন সাংবাদিককে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে; গত বছর যা ছিল ২৫০ জন।
বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক উত্তেজনা নিয়ে খবর প্রকাশ করতে গিয়ে অনেক সাংবাদিককে এ বছর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে। চীন, তুরস্ক, মিশর ও সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিকের জেল হয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে অনেক দেশের সরকার সাংবাদিকদের কারাগারে ঢুকিয়ে মহামারী নিয়ে খবর প্রকাশ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। অন্তত দুইজন সাংবাদিক পুলিশি হেফাজতে থাকার সময় এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন বলে সিপিজে’র প্রতিবেদনে জানানো হয়।
সিপিজে-র নির্বাহী পরিচালক জোয়েল সিমন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘একটি বৈশ্বিক মহামারী চলাকালে রেকর্ড সংখ্যায় সাংবাদিককে জেলে পোরার ঘটনা খুবই দুঃখজনক এবং ভয়াবহ আতঙ্কের বিষয়।”
সিপিজে’র প্রতিবেদনে এজন্য বিশ্বনেতাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখার ইচ্ছার অভাবকে দায়ী করা হয়েছে। বিশেষ করে সংবাদমাধ্যমের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক মনোভাবের ফলে এমনটা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
এ বছর বিশ্বজুড়ে ৩৪ জন সাংবাদিককে ‘মিথ্যা খবর’ প্রকাশের অভিযোগেও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৩১।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনও সাংবাদিক কারাগারে ছিলেন না। যদিও এবছর সেখানে ১১০ জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের বেশিরভাগই পুলিশের নৃশংসতার বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভের খবর সংগ্রহ ও প্রকাশ করার কারণে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর কারাগারে যাওয়া সাংবাদিকদের দুই-তৃতীয়াংশের বিরুদ্ধেই রাষ্ট্র-বিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদী কর্মকান্ড বা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার ‘অপরাধে’ তাদেরকে অভিযুক্ত করা হয় এবং জেলে ঢোকানো হয়।