গত মাস থেকে শুরু হওয়া এই দাবানল এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৬ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। পুড়ে গেছে হাজার হাজার একর ভূমি। শত শত বাড়ি ঘর পুড়ে গিয়ে লাখো মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
বিবিসি জানায়, পশ্চিমের বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যের বাতাসে দূষণের মাত্রা মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে পৌঁছেছে। ভূ্উপগ্রহের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মধ্য-আটলান্টিক মহাসাগরের উপর দিয়ে প্রবাহিত ‘জেট স্ট্রিম’ পশ্চিমের ধোঁয়াকে পূর্ব উপকূলে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
ভূপৃষ্ঠ থেকে বেশ কয়েক মাইল উপরে পৃথিবীকে ঘিরে অত্যন্ত শক্তিশালী বাতাসের স্রোত রয়েছে, যেগুলোকে জেট স্ট্রিম বলে। সংকীর্ণ এই স্রোতে বায়ু মূলত অত্যন্ত দ্রুত বেগে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ধাবিত হয়। উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের প্রতিটিতে দুই বা তিনটি জেট স্ট্রিম রয়েছে।
এক টুইটে নিউ ইয়র্কের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) জানায়, মঙ্গলবার এই অঙ্গরাজ্যে আকাশে ২৫ হাজার ফুট উপর দিয়ে ধোঁয়া প্রবাহিত হচ্ছে।
‘‘যদি আজ আকাশের দিকে তাকান তবে সেখানে হলুদ বা বাদামী বর্ণের দাগ দেখতে পাবেন। আপনি আসলে দাবানল থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া দেখতে পাচ্ছেন।”
বিবিসি জানায়, এদিন রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির আকাশও ঘোলাটে ছিল। এনডব্লিউএস জানায়, সেখানে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৫-২০ হাজার ফুট উপর দিয়ে ধোঁয়া বইছে।
ধোঁয়ার কারণে আকাশ ঘোলাটে হয়ে থাকায় ওয়াশিংটন ডিসিতে তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে।
অগাস্টের শুরু থেকেই ওরেগন, ওয়াশিংটন এবং ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য জুড়ে ডজনের বেশি জায়গায় আগুন জ্বলছে। ঝড়ো বাতাস এবং শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ওই সব অঞ্চলের কোথায় কোথায় বায়ু দূষণের মাত্রা রেকর্ড ছাড়িয়েছে।
ওই সব অঙ্গরাজ্যে ধোঁয়ায় ঢেকে যাওয়া নগরীগুলোতে বাতাস এতটাই দূষিত হয়ে উঠেছে যে অনেক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোথাও বিমান চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ‘দুর্বল বন ব্যবস্থাপনাকে’ ভয়াবহ এ দাবানলের কারণ বলেছেন।
অন্যদিকে, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম বলেন, ভয়াবহ এই দাবানল ‘জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে থাকা বিতর্কের’ অবসান ঘটিয়েছে।
ট্রাম্প বরাবরই জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে ‘ভুয়া’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।