যুক্তরাষ্ট্রে জলবায়ু নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে দাবানল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড টাম্প ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানল পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে যাওয়ার আগেই এই আগুনের কারণ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Sept 2020, 04:19 PM
Updated : 14 Sept 2020, 04:19 PM

সোমবার ক্যালিফোর্নিয়া সফরের কথা রয়েছে ট্রাম্পের। তার আগেই ওয়েস্ট কোস্ট এলাকার ডেমোক্র্যাটিক গভর্নররা এই দাবানলে জলবায়ু পরিবর্তনের ভূমিকা থাকার কথা অস্বীকার করার জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

ডেমোক্র্যাটিক গভর্নররা বলছেন, এই দাবানল জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। অনেক গবেষণাতেও বাড়তে থাকা বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে ব্যাপক দাবানলের যোগসূত্র পাওয়া গেছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিদ্যমান দাবানল পরিস্থিতির জন্য দুর্বল বন ব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে অগাস্টের শুরু থেকে ক্যালিফোর্নিয়া, ওরেগন এবং ওয়াশিংটন রাজ্য দাবানলে পুড়ছে। মারা গেছে অন্তত ৩৫ জন। প্রায় ২০ লাখ হেক্টর এলাকা পুড়ে গেছে। লাখ, লাখ মানুষকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে।

ওয়াশিংটনের গভর্নর বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই রাজ্যে রাজ্যে দাবানল ছড়িয়ে পড়ছে। ওরেগন রাজ্যের গভর্নর কেট ব্রাউনও বলছেন একই কথা। এই দাবানল থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রত্যেকেরই যথাসম্ভব জলবায়ু পরিবর্তন রুখে দাঁড়াতে কিছু করা দরকার বলে মত তার।

একই সুর ধ্বনিত হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসমের কণ্ঠেও। গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনিও বলেছেন, এই দাবানলই দেখিয়ে দিয়েছে যে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তর্কাতর্কির আর অবকাশ নেই। ট্রাম্পকে ক্যালিফোর্নিয়ায় পদার্পন করে পরিস্থিতি সচক্ষে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ক্যালিফোর্নিয়ায় সম্প্রতি অগাস্ট মাসেই উষ্ণতার রেকর্ড হয়েছে। ডেথ ভ্যালিতে রেকর্ড তাপমাত্রা ছিল। বিবিসি জানায়, ক্যালিফোর্নিয়া কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, সোমবার দক্ষিণের জোর বাতাস এবং কম আদ্রতার কারণে আগুন আরও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে।

বিবিসি’র পরিবেশ বিষয়ক এক সংবাদদাতা বলেছেন, জোর বাতাসের মতো কারণে যেমন ওয়েস্ট কোস্টে দাবানল ছড়িয়ে যাচ্ছে, তেমনি মানুষের কর্মকাণ্ড থেকে সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উষ্ণতা বেড়ে এই আগুনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।

দাবানল পরিস্থিতির জন্য প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে দায়ী করেছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনও। মানুষের জীবনের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন এক বিরাট বাস্তব হুমকি। অথচ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ করে এর বাস্তবতাকে অস্বীকার করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

তবে ট্রাম্প এই দাবানলের কারণ হিসাবে বন ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার ফলেই কথাই বারবার বলছেন। যার মধ্যে আছে বন পরিষ্কার রাখা, বহু বছর ধরে পড়া পাতা ও গাছের ভগ্নাংশ সরানোর মত কাজ। এগুলো খকনওই করা হয়নি বলছেন তিনি।

আর জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে ট্রাম্প এর আগে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে বর্ণনা করলেও এ বিষয়টি ভাঁওতা বলে উল্লেখ করে ছিলেন। সেইসঙ্গে বিশ্ব উষ্ণায়ন বাড়তে থাকার পেছনে আদৌ মানুষের ভূমিকা আছে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। শেষমেশ ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারও করে নেন।