বৈরুতে বিস্ফোরণের একমাস পর বন্দরে ভয়াবহ আগুন

লেবাননের রাজধানী বৈরুতের বন্দরে বিস্ফোরকের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণের এক মাস পেরোতে না পেরোতেই এবার এলাকাটির তেল ও টায়ারের গুদাম জ্বলছে দাউ দাউ আগুনে।

>>রয়টার্স
Published : 10 Sept 2020, 12:37 PM
Updated : 10 Sept 2020, 07:10 PM

লেবাননের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বন্দরের শুল্কমুক্ত এলাকায় আছে এই তেল-টায়ারের গুদাম। বৃহস্পতিবার সেখানেই আগুনের সূত্রপাত। তবে আগুন লাগার কারণ কি তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্কার জানা যায়নি।

আগুনের কালো ধোঁয়ার বিশাল কুন্ডলীতে ছেয়ে গেছে শহরের আকাশ। মাত্র একমাস আগেই বিস্ফোরণের ভীতিকর অভিজ্ঞতা বয়ে বেড়ানো শহরবাসী এ ধোঁয়া দেখেই পালাতে শুরু করেছে।

এক বাসিন্দার কথায়, “অবশ্যই ভয়ের ব্যাপার। মাত্র একমাস হল বৈরুতে বিস্ফোরণের ধ্বংসযজ্ঞ দেখেছি। আবারও একই জিনিসই ঘটতে দেখতে পাচ্ছি।”

টিভি ফুটেজে দমকলকর্মীদেরকে বন্দর এলাকায় আগুন নিভানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে। সেনাবাহিনীও আগুন নেভাতে হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে। ঘটনাস্থলে হেলিকপ্টার থেকে পানি ছিটানো হচ্ছে।

গত ৪ অগাস্টের বিস্ফোরণে এ বন্দরেরই বিভিন্ন গুদাম এবং শস্যভান্ডার নষ্ট হয়েছে। বন্দরের অ্যামোনিয়াম নাইট্রটের গুদামে ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণ কড়ে নেয় প্রায় ১৯০ জনের প্রাণ, আহত হয় ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। শহরের অর্ধেকই ধুলিস্যাৎ হয়।

লেবাননে রেডক্রসের প্রধান কর্মকর্তা জর্জ কেনেথ বলছেন, এবারের তেল-টয়ারের গুদামের আগুন থেকে আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটার আশঙ্কা নেই। তাছাড়া, আগুনে কেউ আহতও হয়নি। তবে আগুনের ধোঁয়ার কারণে কিছু মানুষ শ্বাসকষ্টে ভুগছে।

পরিবার নিয়ে বৈরুত ছেড়ে চলে যাওয়ার পথে এক বাসিন্দা বলেন, “বন্দরে আবার আগুন লেগেছে, ধোঁয়া বেরোচ্ছে। এ থেকে বাঁচতে আমি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শহর ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছি।”

লেবাননের সরকারি কৌসুলি তাৎক্ষণিকভাবে এই আগুন লাগার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে বৈরুতের বন্দরে বিস্ফোরণের একমাস পেরোলেও সে সম্পর্কে প্রাথমিক তদন্তে কি পাওয়া গেল তা কর্তৃপক্ষ না জানানোয় অনেক লেবাননবাসীই হতাশ।

আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুতের অধ্যাপক কারমেন বলেন, “এই আগুন আরও একবার লেবাননের শাসকগোষ্ঠীর অব্যবস্থাপনার প্রমাণ দিল। যারা বছরের পর বছরের দুর্নীতি আর দুর্বল শাসনে দেশকে সংকটে ফেলেছে।”

“এটি বড় ধরনের অপরাধ, গাফিলতি এবং ঔদ্ধত্যও বটে। তারা কোনওকিছু সামাল দিতে পারবে বলে আস্থা রাখা যায় না।”