ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার অবস্থা খতিয়ে দেখতে দেশটি সফর করতে চাওয়া যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি প্যানেলের সদস্যদের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে নয়া দিল্লি।
Published : 11 Jun 2020, 04:17 PM
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার মূল্যায়নে এ ধরনের বিদেশি সংস্থাগুলোর কোনো এখতিয়ারই নেই।
২০১৪ সালে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় বসার পর থেকে ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর একের পর এক হামলা-নির্যাতনের ঘটনায় নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ) ভারতকে ‘বিশেষ উদ্বেগজনক দেশের’ তালিকায় অন্তর্ভুক্তও করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এ তালিকায় চীন, ইরান, সিরিয়া ও রাশিয়ার মতো দেশগুলোও আছে।
এপ্রিলে ইউএসসিআইআরএফ তাদের প্রতিবেদনে ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন থেকে মুসলমানদের বাদ দেয়ায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা দিতে মার্কিন প্রশাসনের প্রতি সুপারিশও করেছিল।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা পর্যালোচনাকারী এ মার্কিন কমিশন ভারতের পরিস্থিতি নিয়ে যে সমীক্ষা চালিয়েছিল, নয়া দিল্লি তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শংকর।
ভারতীয় নাগরিকদের অধিকার নিয়ে ‘ইউএসসিআইআরএফের জ্ঞান সামান্য’ অ্যাখ্যা দিয়ে মার্কিন এ প্যানেলের অবস্থানকে পক্ষপাতদুষ্ট বলেও অভিহিত করেছেন তিনি।
“ধর্মীয় স্বাধীনতার সঙ্গে সম্পর্কিত ইস্যুতে ভারত সফর করতে চাওয়া ইউএসসিআইআরএফের দলকে ভিসা দেইনি আমরা,” ১ জুন বিজেপির এক সাংসদকে লেখা চিঠিতে জয়শংকর এমনটিই বলেছেন।
ভারতের এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন, ভারতীয় নাগরিকদের সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত অধিকার নিয়ে ইউএসসিআইআরএফের মতো বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলো কিছু বলতে পারে না, এ নীতির ভিত্তিতেই সরকার এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।
ঝাড়খণ্ড থেকে নির্বাচিত নিশিকান্ত দুবে লোকসভায় ইউএসসিআইআরএফের প্রতিবেদনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। তাকে লেখা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠির প্রতিলিপি রয়টার্স পর্যালোচনা করেছে।
সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ বা রায় ভারত মেনে নেবে না, বলেছেন জয়শংকর।
রয়টার্স জানিয়েছে, এ প্রসঙ্গে সব্ প্রশ্ন ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক ইউএসসিআইআরএফের কাছে স্থানান্তর করে দিয়েছে নয়া দিল্লির যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। তাৎক্ষণিকভাবে মার্কিন এ প্যানেলের কাছ থেকেও কোনো প্রতিক্রিয়াও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের এ কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম প্যানেলটি ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয়দলের সদস্যদের নিয়েই গঠিত।
সরকারি এ পরামর্শক প্যানেল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা পর্যালোচনা করে সে অনুযায়ী কংগ্রেস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টকে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে থাকে। তবে তাদের সুপারিশ মানার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।