সাংবাদিক ডাফনে কারুয়ানা গ্যালিজিয়ার খুনকে কেন্দ্র করে দেখা দেওয়া রাজনৈতিক ও আইনি সংকটের কারণে মাল্টার প্রধানমন্ত্রী যোশেফ মাসকাট পদত্যাগ করার পরিকল্পনা করেছেন বলে জানা গেছে।
Published : 30 Nov 2019, 10:12 PM
প্রধানমন্ত্রী মাসকাটের রাজনৈতিক সহযোগীরা তার পদত্যাগের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বলে শুক্রবার প্রকাশিত টাইমস অব মাল্টার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
কিন্তু মাসকাটের মুখপাত্র খবরটি স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটিই করেননি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রোববার এক অনুষ্ঠানে মাসকাটের ভাষণ দেওয়া কথা ছিল, সেটি বাতিল করেছে তার দল লেবার পার্টি।
ওই খুনের মামলাকে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহে মাসকাটের চিফ অব স্টাফ ও মন্ত্রিসভার দুই সদস্য পদত্যাগ করেছেন। এই খুনের ঘটনায় দ্বীপ রাষ্ট্রটির পরস্পর ঘনিষ্ঠ অভিজাত মহল পতনের হুমকির মুখে আছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
অনুসন্ধানী সাংবাদিক কারুয়ানা গালিজিয়া দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করার সময় ২০১৭ সালের ১৬ অক্টোবর এক গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন।
গালিজিয়াকে হত্যার জন্য বোমা পাতার সঙ্গে জড়িত তিন ব্যক্তি বিচারের অপেক্ষার আছেন। কিন্তু তাদের যে ভাড়া করেছিল কর্তৃপক্ষ এখনও সেই মূল পরিকল্পনাকারীকে ধরতে পারেনি। তবে গালিজিয়াকে হত্যার নির্দেশ দেওয়া ব্যক্তির সঙ্গে খুনিদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন যে সন্দেহভাজন, রাজসাক্ষী হওয়ার বিনিময়ে তাকে ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
মৃত্যুর আগে গালিজিয়া ’সেভেনটিন ব্ল্যাক’ নামের এক গোপন অফশোর কোম্পানির খোঁজ পেয়েছিলেন। ইয়রগেন ফেনেচ নামে মাল্টার এক ব্যবসায়ী এই কোম্পানির মালিক বলে গত বছর রয়টার্সের এক অনুসন্ধানে বের হয়। এই কোম্পানির সঙ্গে মাসকাটের চিফ অব স্টাফ কিথ স্কেমব্রি, মাল্টার পর্যটনমন্ত্রী কনরাড মিজ্জি জড়িত আছেন বলে ধারণা পাওয়া যায়।
মাসকাটের চিফ অব স্টাফ পদ থেকে পদত্যাগ করা স্কেমব্রিকে গত সপ্তাহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে কোনো অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে সে।
তাদের তদন্তের জন্য তাকে আর আটক রাখার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মাসকাটের ডান হাত বলে পরিচিত স্কেমব্রি রাতারাতি মুক্তি পাওয়ার পর শুক্রবার মাকাটের পদত্যাগ দাবি করেছে গালিজিয়ার পরিবার।
গালিজিয়ার পরিবারের বক্তব্য হল, যে তদন্তে মাসকাটের তিন ঘনিষ্ঠ সহযোগীর নাম এসেছে সেই তদন্তের তত্ত্বাবধান মাসকাট করতে পারেন না।
এক বিবৃতিতে গালিজিয়ার পরিবার বলেছে, “ন্যায়বিচারের এই বিকৃতি আমাদের দেশকে লজ্জায় ফেলছে, আমাদের সমাজকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে এবং আমাদের হতাশ করছে। এটি আর মেনে নেওয়া যায় না।”
এর আগে পদত্যাগের আহ্বান জানানো হলেও মাসকাট তা নাকচ করেছিলেন।
“আমি আমার দায়িত্ব ত্যাগ করবো না। মাল্টার স্থিতিশীল নেতৃত্ব দরকার এবং দেশের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়া অব্যাহত রাখবো আমি এবং কাউকে সুরক্ষা দেবো না,” বলেছিলেন তিনি।