দুই সপ্তাহ আগে আরোপ করা বাণিজ্য ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে না নিলে সমস্যা সমাধানে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কোনও আলোচনায় যাবে না কাতার।
Published : 20 Jun 2017, 08:38 PM
সোমবার কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে একথা জানিয়ে বলা হয়, যদিও সমস্যার সমাধান এখনও সম্ভব বলে বিশ্বাস করে দোহা।
আরব অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অভিযোগ তুলে ৫ জুন কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেয় প্রতিবেশী সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, ইয়েমেন ও মিশর।
ইসলামিক স্টেট (আইএস), আল কায়েদা, মুসলিম ব্রাদারহুডসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠনকে কাতার ‘মদদ দিচ্ছে’ বলে অভিযোগ তাদের।
যদিও কাতার বরাবরই ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল-থানি বলেন, পূর্ব নির্ধারিত নীতিমালা অনুযায়ী, দোহা অন্যান্য আরব দেশগুলোর উদ্বেগ নিয়ে ‘আলোচনায় বসা ও তা সমাধানে’ প্রস্তুত। তবে অবশ্যই আগে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।
তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে কোনও অগ্রগতি আমরা দেখতে পাচ্ছি না। যে কোনও আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার জন্য এটিই একমাত্র শর্ত।”
নিষেধাজ্ঞার কারণে অর্থনীতি ও বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যে বিরূপ প্রভাব পড়বে তা নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছেন বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আল-থানি।
“যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের শক্ত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিশ্বজোটে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। সংকটের শুরু থেকেই আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।”
এর আগে সোমবার ভোরের দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনোয়ার গারগাশ বলেন, চাহিদা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা কোনও দেশেরই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ইচ্ছা নেই।
প্যারিসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “কাতারকে বুঝতে হবে এটি নতুন পররাষ্ট্রনীতি এবং তাদের বছরের পর বছর বিচ্ছিন্ন থাকতে হতে পারে।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের কয়েকদিন পরই কাতারের সঙ্গে প্রতিবেশী ওই পাঁচ দেশ সম্পর্ক ছিন্ন করে।
সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেওয়ার দুইদিন পর টুইট বার্তায় ট্রাম্প কাতারকে বিচ্ছিন্ন করার মধ্য দিয়েই সন্ত্রাসবাদের মূলোৎপাটন শুরু হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন।
যদিও মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বিমান ঘাঁটিটি এই কাতারেই। সেখানে আট হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন আছে। তাছাড়া, সিরিয়া এবং ইরাকে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন অভিযানগুলোও এখান থেকেই চালানো হয়।
কাতারের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তুরস্ক। কাতার সরকারের অর্থে পরিচালিত আল জাজিরা টেলিভিশন চ্যানেলে দোহার তারিক বিন জিয়াদ সেনাঘাঁটির ভেতরে তুরস্কের পাতাকাবাহী সামরিক যান দেখা গেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সামরিক মহড়ার জন্য রোববার তুরস্কের সেনারা কাতার পৌঁছেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তারে সৌদি আরবের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানও খাদ্য সহায়তা নিয়ে কাতারের পাশে দাঁড়িয়েছে।