যুক্তরাষ্ট্রের কানসাসে ভারতীয় প্রকৌশলী শ্রীনিবাস কুচিবোতলার খুনের ঘটনায় তোলপাড়ের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এতদিন নীরব থাকার পর অবশেষে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে হোয়াইট হাউস। খোদ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও ঘটনাটির তীব্র নিন্দা করেছেন।
Published : 01 Mar 2017, 06:02 PM
গত সপ্তাহে কানসাসের একটি বারে সাবেক মার্কিন নৌসেনার গুলিতে শ্রীনিবাসের মৃত্যু এবং তার বন্ধু আহত হওয়ার ঘটনাটি ‘জাতিগত বিদ্বেষ থেকে ঘৃণার প্রকাশ’ বলে হোয়াইট হাউস মন্তব্য করেছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, “যতই ভেতরের বিষয়গুলো উন্মুক্ত হচ্ছে ততই মনে হচ্ছে এটি জাতিগত বিদ্বেষ থেকে সৃষ্ট ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ। আমরা আবারও বলতে চাই, প্রেসিডেন্ট এ ধরনের অথবা অন্য কোনো ধরনের বর্ণবাদী বা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে পরিচালিত আক্রমণের কঠোর নিন্দা জানান।”
ওদিকে, ক্যাপিটল হিলে মঙ্গলবার কংগ্রেসে প্রথম ভাষণের শুরুতেই ভারতীয় খুনের নিন্দা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র ঐক্যবদ্ধভাবে ঘৃণা এবং অশুভ কোনওকিছুর নিন্দায় অটল থাকবে।”
তিনি বলেন, “আমরা নীতিতে বিভক্ত জাতি হতে পারি। কিন্তু কোনও ধরনের ঘৃণা কিংবা অশুভর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে একযোগে এর নিন্দা জানাতে আমরা সবাই বদ্ধপরিকর।”
ভারতীয়দের সুবিধার্থে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে মেধা-ভিত্তিক অভিবাসন পদ্ধতি চালু করবেন বলেও জানান।
২২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় রাতে কানসাসের ওলাথে শহরের একটি বারে ৫১ বছর বয়সী অ্যাডাম পুরিনটনের গুলিতে শ্রীনিবাস কুচিবোতলার (৩২) নামে ভারতীয় এক প্রকৌশলী নিহত এবং তার বন্ধু অলোক মাদাসানি আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গুলি করার সময় পুরিনটন চিৎকার করে বর্ণবাদী নানা মন্তব্য করেছেন।
বিবিসি জানায়, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ঘটনাটি ‘হেইট ক্রাইম’ বা ঘৃণা অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করেই তদন্তে অগ্রসর হচ্ছে।
সোমবার পুরিনটনকে আদালতে হাজির করে তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ (ফার্স্ট ডিগ্রি মার্ডার) আনা হয়েছে।
ওলাথের ‘অস্টিন্স বার অ্যান্ড গ্রিল’ এ বন্দুক হাতে হামলার পর পুরিনটন প্রায় ৭০ মাইল গাড়ি চালিয়ে মিসৌরির ক্লিটনের একটি রেস্তোরাঁয় গিয়ে সেখানকার এক কর্মীর কাছে নিজের কাণ্ডের কথা স্বীকার করেন।
পরে রেস্তোরাঁটির একজন বারটেন্ডার ৯১১ এ ফোন করে পুলিশকে জানায়, তাদের রেস্তোরাঁয় আসা এক ব্যক্তি বলছে, ওলাথে দুই ভারতীয়কে হত্যা করেছে।
ওদিকে, সোমবার কুচিবোতলার মৃতদেহ ভারত পৌঁছায়। সঙ্গে তার স্ত্রী এবং ভাই ছিলেন।
ভারতের হায়দরাবাদে মঙ্গলবার কুচিবোতলার শেষকৃত্যানুষ্ঠানে প্রায় দুইশ মানুষ অংশ নেয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।