মিনায় হজে পদদলনে নিহতের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার বলে দাবি করেছে ইরান।
Published : 26 Sep 2015, 02:31 AM
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন প্রেস টিভি ইরানের হজ সংস্থার প্রধান সাঈদ ওহাদিকে উদ্ধৃত করে বলেছে, সৌদি আরবকে সঠিক তালিকা দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে মিনায় ‘শয়তানের স্তম্ভে’ পাথর ছুড়তে যাওয়ার পথে পদদলনের এ ঘটনা ঘটে, এ পর্যন্ত ৭১৭ জন নিহত এবং আরও অন্তত ৮৬৩ জনের আহত হওয়ার খবর দেয় সৌদি সিভিল ডিফেন্স। তবে এরপর গত ২৪ ঘণ্টায়ও সেই সংখ্যার কোনো নড়চড় হয়নি।
সাঈদ ওহাদি সৌদি আরবের এমন তথ্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, “নিহতের সংখ্যা প্রায় দুই হাজারের মতো হবে।”
সৌদি কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও অব্যবস্থা এই হতাহতের জন্য দায়ী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এরই মধ্যে নিজের দেশের ১৩১ নাগরিকের মৃত্যুতে ইরান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছে, হজের মতো বড় আয়োজন ব্যবস্থাপনার ক্ষমতা সৌদি আরবের নেই।
হতাহতের এ ঘটনায় শত শত ইরানি তেহরানে জমায়েত হয়ে সৌদি পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও দেখিয়েছে।
পাশাপাশি রিয়াদের কূটনীতিককে ডেকে সৌদি আরবের অব্যবস্থাপনার জন্য নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়ে দিয়েছে ইরান।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে দাবি করা হয়েছে, হজযাত্রীরা যেসব সড়ক দিয়ে এসে শয়তানের প্রতীকী স্তম্ভে পাথর মেরে ওই এলাকা থেকে চলে যান, হঠাৎ সেইসব সড়কের মধ্যে দুটি সড়ক বন্ধ থাকায় ভিড় এড়াতে বা পালিয়ে যেতে ব্যর্থ হন হজযাত্রীরা। এ ছাড়াও পাথর মারতে আসা হজযাত্রীদের একমুখী চলাচলের একটি সড়ককে হঠাৎ দ্বিমুখী করা হয় বলে অভিযোগ শোনা গেছে।
এতে বলা হয়, সৌদি আরবের কর্মকর্তারা বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল-আজিজ আল সউদের ছেলের মিনায় উপস্থিতির বিষয়টি 'সঠিক নয়' বলে দাবি করেছেন।
সৌদি হজ কমিটির প্রধান প্রিন্স খালেদ আল-ফয়সাল হুড়োহুড়ির জন্য ‘আফ্রিকান নাগরিকসহ হাজিদের একটি দল’কে দায়ী করেছেন। এ প্রসঙ্গও প্রতিবেদনে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি সরকারের হজ ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতার কারণে প্রায়ই হজের সময় নানা দুর্ঘটনা ঘটছে। মাত্র প্রায় দুই সপ্তাহ আগে মসজিদুল হারামে একটি ক্রেইন ভেঙ্গে পড়ার ঘটনায় প্রায় ১২০ জন হজযাত্রী নিহত হয়েছেন। মিনায় পদপিষ্ট হয়ে হজযাত্রী মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে ২০০৬ সালেও। এ অবস্থায় পবিত্র হজের মত একটি আন্তর্জাতিক ও বিশ্ব-সমাবেশ আন্তর্জাতিক তথা বহুজাতিক ব্যবস্থাপনায় হওয়া উচিত বলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দাবি ক্রমেই জোরদার হচ্ছে।
আরব নিউজের তথ্য অনুযায়ী, হজ আর ওমরাহ মিলিয়ে ২০১২ সালে সাড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার আয় করে, যা দেশটির জিডিপির ৩ শতাংশ।