প্রতিবছর হজ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সৌদি আরব সরকার গড়ে সাড়ে আট বিলিয়ন ডলার আয় করলেও হজযাত্রীদের নিরাপত্তা ও সুবিধা অসুবিধার দিকগুলো আর আগের মত দেখা হচ্ছে না বলে অভিযোগ এসেছে।
Published : 25 Sep 2015, 11:13 AM
বৃহস্পতিবার মিনায় পদদলনের ঘটনার মাত্র আধা ঘণ্টা আগে ওই এলাকা পার হয়ে যাওয়া একজন বাংলাদেশি হাজি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ বছর আমার মনে হয়েছে, সৌদি সরকার এখন আর আগের মত হাজিদের দিকে খেয়াল করছে না।”
ট্র্যাভেল এজেন্সির ব্যবসার সুবাদে প্রতি বছরই হজে অংশ নেওয়ার সুযোগ হয় এই প্রবাসী বাংলাদেশির।
অন্য হাজিদের সঙ্গে তিনিও বুধবার রাত কাটিয়েছেন মুজদালিফায়। হজের রীতি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে অন্য সবার সঙ্গে তিনিও মিনার জামারায় যান ‘শয়তানের স্তম্ভে’ পাথর ছোড়ার জন্য।
জামারায় যাওয়ার পথেই ২০৪ ও ২২৩ নম্বর সড়কের সংযোগস্থলে স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে ভিড়ের চাপে পদদলনের ঘটনা ঘটে।
সৌদি সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭১৭ জন, আরও অন্তত ৮৬৩ জন আহত হয়েছেন।
“গতরাতে মুজদালিফায় তারা আমার সঙ্গেই ছিল,” বলেন ওই বাংলাদেশি।
পদদলনে বেঁচে যাওয়া একজনের বরাত দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, আফ্রিকা থেকে আসা হাজিদের একটি দল আগে বাড়ার জন্য গায়ের জোর খাটানোর কারণেই মর্মান্তিক এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।
সৌদি আরবের স্বাস্থ্যমন্ত্রী খালেদ আল-ফালিহ বলেছেন, হাজিরা দিকচিহ্ন সঠিকভাবে অনুসরণ না করায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
হজ কমিটির প্রধান প্রিন্স খালেদ আল-ফয়সালও হুড়োহুড়ির জন্য ‘আফ্রিকান নাগরিকসহ হাজিদের একটি দল’কে দায়ী করেছেন। তবে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, এই ঘটনার দায় সৌদি সরকারকেই নিতে হবে।
বাংলাদেশি ওই হাজি জানান, পাথর ছোড়ার জন্য ‘শয়তানের স্তম্ভে’ যাওয়া আসার পথে ৪০ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে ক্লান্ত, বয়স্ক হাজিদের জন্য ঠিকমত পানির ব্যবস্থাও এবার সৌদি কর্তৃপক্ষ করেনি।
বিবিসির সাংবাদিক সীমা ইলা ইসুফু ঘটনাস্থলের খুব কাছে ছিলেন। পদদলনে তার ফুফুও মারা গেছেন।
সীমাকে উদ্ধৃত করে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সেখানে ওইসময় বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের মধ্যে নাইজেরিয়া, সাদ আর সেনেগালের নাগরিকরাও ছিলেন।
“লোকজন নিরাপদ জায়গায় যাবার জন্য এক অপরের উপরে উঠতে শুরু করে, এবং সেভাবেই অনেক লোক মারা যান। অনেকে আল্লাহর নাম ডাকছিলেন, বাচ্চা ও শিশুসহ অনেকে কাঁদছিল।
“মানুষ মাটিতে পরে সাহায্য চাইছিল, কিন্তু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবার জন্য কেউ ছিল না।”