বিনিময়ে ভেনেজুয়েলাকে সমসংখ্যক রাজনৈতিক বন্দি মুক্তি দিতে হবে।
Published : 21 Apr 2025, 10:21 AM
ভেনেজুয়েলার যেসব নাগরিক যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্বাসিত হয়ে এল সালভাদরে কারাবন্দি রয়েছেন, কারাকাসে আটক রাজনৈতিক বন্দিদের বিনিময়ে তাদের প্রত্যর্পণের প্রস্তাব দিয়েছে স্যান সালভাদর।
বিবিসি লিখেছে, মার্কিন নির্বাসিত এমন ভেনেজুয়েলানের সংখ্যা ২৫২, যাদেরকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নাইব বুকেলে। তিনি সোশাল মিডিয়ায় ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর উদ্দেশ্যে এই প্রস্তাব দিয়েছেন।
বুকেলে বলেছেন, নির্বাসিত ভেনেজুয়েলানদের অনেকে ‘ধর্ষণ ও হত্যা’ করেছে; অন্যদিকে ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক বন্দিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে কেবল মাদুরোর বিরোধিতা করার কারণে। গত বছর যে নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতা ধরে রেখেছেন, সেই ভোট নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে।
ভেনেজুয়েলা সরকারের দাবি, তাদের হাতে কোনো রাজনৈতিক বন্দি নেই। তবে অধিকার গোষ্ঠীগুলো এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
বুকেলে এক্স পোস্টে লিখেছেন, “আমি আপনাকে (মাদুরো) একটি মানবিক চুক্তির প্রস্তাব দিতে চাই, নির্বাসিত ২৫২ ভেনেজুয়েলানদের সবার বিনিময়ে আপনাদের কাছে থাকা হাজারো রাজনৈতিক বন্দিদের মধ্যে একই সংখ্যক ব্যক্তিকে মুক্তি দিন।”
তার প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের প্রায় ৫০ জন বন্দি বিনিময়ের কথাও রয়েছে।
ভেনেজুয়েলা সরকার বুকেলের প্রস্তাবের বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।
গত কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুই শতাধিক ভেনেজুয়েলানকে এল সালভাদরে পাঠানো হয়েছে।
তারা ভেনেজুয়েলাভিত্তিক আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধী চক্র ট্রেন ডি আরাগুয়ার সদস্য বলে অভিযোগ করেছে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।
ওয়াশিংটন এসব ব্যক্তিকে উচ্চ নিরাপত্তার কুখ্যাত সন্ত্রাস দমন কেন্দ্রে রাখার জন্য এল সালভাদরকে অর্থ দিয়ে থাকে।
বিবিসি লিখেছে, বুকেলে নিজেকে ‘বিশ্বের শীতলতম স্বৈরশাসক’ বলে থাকেন। দলবদ্ধ অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করা এই নেতা গত বছর ফের নির্বাচিত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভেনেজুয়েলানদের এল সালভাদরে নির্বাসনে পাঠানোর নিন্দা জানিয়ে মাদুরো একে ‘অপহরণ’ এবং মানবাধিকারের ‘ব্যাপক লঙ্ঘন’ বলে বর্ণনা করেছেন।
জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি বেশ কয়েকটি আইনি বাধার সম্মুখীন হয়েছে।
সবশেষ ঘটনায় শনিবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ভেনেজুয়েলার সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্যদের নির্বাসনে পাঠানোর প্রক্রিয়া স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
গণহারে নির্বাসনের জন্য আইনের ব্যবহার নিয়ে যেসব চ্যালেঞ্জ এসেছে, সেসবকে 'অমূলক মামলা' বলছে হোয়াইট হাউস।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্যদের নির্বাসনে পাঠাতে ১৯৭৮ সালের বিদেশি শত্রু আইন ব্যবহার করেছেন। এই আইনে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে গতানুগতিক প্রক্রিয়া ছাড়াই শত্রু দেশের অধিবাসী বা নাগরিককে আটক ও নির্বাসনের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
বিবিসি লিখেছে, এর আগে এই আইনটি মাত্র তিনবার ব্যবহার করা হয়েছিল, তার সবই যুদ্ধের সময়।