ওয়াইন আর ললিপপ খেয়ে গহীন জঙ্গলে পাঁচ দিন

জঙ্গলে রাস্তা শেষ হয়ে গেলে বিপাকে পড়েন লিলিয়ান। পথ ভুল করেছেন বুঝতে পেরে গাড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করলে সেটা আটকে যায় কাদায়।

অস্ট্রেলিয়ার জঙ্গলে বেড়াতে বেরিয়ে পথ হারানো এক নারী পাঁচদিন পর উদ্ধার পেয়েছেন, যিনি এই সময়টা টিকে ছিলেন ওয়াইন আর ললিপপ খেয়ে।

লিলিয়ান নামের ৪৮ বছর বয়সী ওই নারী ভিক্টোরিয়ার হাই কাউন্টির পর্বতঘেরা জঙ্গলের পথে একদিনের সফরে বের হয়েছিলেন। ভাগ্যক্রমে তার গাড়িতে ছিল কিছু স্ন্যাকস আর এক বোতল ওয়াইন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ডটকম ডটএইউ জানিয়েছে, পাঁচ দিন পর পাহাড়ি এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে তাকে খুঁজে পায় জরুরি সেবা বিভাগের কর্মীরা। তারা ওই নারীর গাড়ি মিট্টা মিট্টা বুশল্যান্ডের একটি কাঁচা রাস্তায় দেখতে পান। উদ্ধার অভিযানের সেই মুহূর্তের ভিডিও শেয়ার করেছে ভিক্টোরিয়া পুলিশ।

ঘটনার শুরু গত ৩০ এপ্রিল। জঙ্গলের ইয়াঙ্কি পয়েন্ট ট্র্যাকের কাছে রাস্তা শেষ হয়ে গেলে বিপাকে পড়েন লিলিয়ান। যখন তিনি বুঝতে পারেন, ভুল পথে চলে এসেছেন, তখন গাড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করলে সেটা আটকে যায় কাদায়।

গহীন বনে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় তিনি কাউকে ফোন করতে পারেননি। শারীরিক সমস্যার কারণে কিছুদূর হেঁটে সাহায্য পাওয়ার মতো গন্তব্যেও যেতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত তাকে জঙ্গলের ভেতরে গাড়িতেই আটকে থাকতে হয়।

এদিকে লিলিয়ানের খোঁজ না পেয়ে পুলিশকে জানায় তার পরিবার। তখন হেলিকপ্টার নিয়ে উদ্ধার অভিযানে নামে পুলিশ। শেষমেষ পাঁচদিন পর বেঁচে ফেরার আলো দেখতে পান লিলিয়ান। নির্জন বনে একাকী মৃত্যুর পথ থেকে ফেরেন তিনি।

স্থানীয় পুলিশ সার্জেন্ট মার্টিন টর্পে বলেন, লিলিয়ানের কাছে তরল পানীয় হিসেবে ছিল কেবল এক বোতল ওয়াইন। এমনিতে তিনি ওয়াইন পান করতেন না, মায়ের জন্য উপহার হিসেবে কিনে তিনি সেটা গাড়িতে রেখেছিলেন।

টর্পে জানান, ওই নারী একদিনের ছোটখাটো ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন। সে কারণে সঙ্গে হালকা স্ন্যাকস আর কিছু ললিপপ নিয়েছিলেন, কিন্তু পানি ছিল না। গহীন বনের পথে আটকা পড়ে তিনি জঙ্গলে ভেতরে হাঁটাচলা করেননি। সাধারণ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে তিনি গাড়িতেই থেকে যান, যা তাকে খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে।

উদ্ধারের পরই তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পানিশূন্যতার চিকিৎসা দিয়ে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

লিলিয়ানকে উদ্ধারের সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। একজন লিখেছেন, “ওয়াও…কাউকে খুঁজে পাওয়া এবং তাকে প্রিয়জনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার অনুভূতি আপনি বোঝাতে পারবেন না। ভিক্টোরিয়া পুলিশ ও অনুসন্ধান টিমকে অভিনন্দন।”

আরেকজন মন্তব্যের ঘরে লেখেন, “আবেগঘন ভিডিও। কী চমৎকার কাজ করেছেন আপনারা।”