বরখাস্তদের একজন হচ্ছেন, কর্নেল পদমর্যাদার ব্রিগেড চিফ অব স্টাফ এবং মেজর পদমর্যাদার একজন ব্রিগেড ফায়ার সাপোর্ট কর্মকর্তা।
Published : 05 Apr 2024, 07:11 PM
গাজার মধ্যাঞ্চলীয় দাইর আল বালাহ এলাকায় গত সোমবার রাতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় এনজিও ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন (ডব্লিউসিকে) এর সাত কর্মী নিহতের ঘটনায় মারাত্মক ভুল এবং সামরিক বিধি লঙ্ঘনের প্রেক্ষাপটে দুই ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে ইসরায়েল।
এদের একজন হচ্ছেন, কর্নেল পদমর্যাদার ব্রিগেড চিফ অব স্টাফ এবং মেজর পদমর্যাদার একজন ব্রিগেড ফায়ার সাপোর্ট কর্মকর্তা। এছাড়া, সাউদার্ন কমান্ডের প্রধান এক জেনারেল এবং আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এ ঘটনার জন্য তিরস্কারও করেছে ইসরায়েল।
হামলার ঘটনার তদন্তে দেখা গেছে, ইসরায়েলি বাহিনী ত্রাণ গাড়িবহরকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের গাড়ি ভেবে ভুলবশত হামলা চালিয়েছে। ওই হামলার ঘটনায় ডব্লিউসিকে’র ত্রাণবহরের তিনটি গাড়িতে ড্রোন আঘাত হানে। এটি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আদর্শ যুদ্ধ পরিচালনা পদ্ধতির লঙ্ঘন।
শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, “ত্রাণের গাড়িবহরে হামলা বড় ধরনের ভুল। মানুষ চিনতে ভুল করা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভুল এবং মানসম্মত যুদ্ধ পরিচালনা পদ্ধতির বিপরীতে যাওয়া- এইসব ক্ষেত্রে মারাত্মক ব্যর্থতার কারণেই এমনটি ঘটেছে।”
(ডব্লিউসিকে) এর নিহত সাত কর্মীর মধ্যে পোল্যান্ডের একজন, যুক্তরাজ্যর তিনজনসহ অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার এক দ্বৈত নাগরিকও ছিল। তাদের মৃত্যু নিয়ে এ সপ্তাহে বিশ্বে তোলপাড় হয়েছে। পোল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্য তাদের নাগরিক নিহতের ঘটনায় ইসরায়েলের কাছ থেকে ব্যাখ্যাও দাবি করে।
ডব্লিউসিকে বলছে, দাইর আল বালার একটি গুদাম থেকে চলে যাওয়ার সময় ত্রাণবাহী গাড়িবহরে হামলায় কর্মীরা নিহত হয়েছে। তারা সমুদ্রপথে গাজায় নেওয়া ১০০ টনের বেশি খাবার ওই গুদামে রেখে আসতে গিয়েছিল।
ত্রাণবাহী গাড়িবহরে ছিল তিনটি গাড়ি। এর মধ্যে দুটি ছিল অস্ত্রসজ্জিত। তিনটি গাড়িতেই হামলা হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একটি ট্রাকের ওপর অস্ত্রহাতে এক ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছিল। এরপর আরও তিনটি গাড়ি গুদাম ছেড়ে যাওয়ার সময় ইসরায়েলি সেনা কমান্ডাররা সেগুলোকে ডব্লিউসিকে’র বলে শনাক্ত করতে পারেনি।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাবাহিনী আইডিএফ এর সত্যানুসন্ধানী মিশনের তদন্তদলের প্রধান ইয়োয়াভ হার-ইভেন বলেছেন, সেনারা অন্ধকারের মধ্যে গাড়ির ওপর ডব্লিউসিকে লোগো দেখতে পায়নি। ফলে তারা গাড়িটি হামাস যোদ্ধাদের হাতে অবরুদ্ধ ভেবে ভুলবশত তাতে হামলা চালায়।
এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “সে সময় সেনারা ভেবেছিল মানবিক ত্রাণকাজ শেষ হয়েছে। তারা হামাসের গাড়ি অনুসরণ করছে। সে সময় তারা ওই গাড়িতে হামলা করে। এরপর মানুষজনকে সেখান থেকে দৌড়ে দ্বিতীয় গাড়িতে যেতে দেখা গেলে সেনারা দ্বিতীয় গাড়িতেও হামলা করে এবং একইভাবে তৃতীয় গাড়িতেও হামলা চালায়।”
আইডিএফ এর মানসম্মত যুদ্ধ পরিচালনা পদ্ধতি এ ঘটনায় লঙ্ঘিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন হার-ইভেন।