চীন, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাজাখস্তান ও লিচেনস্টোইন ভিত্তিক কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
Published : 24 Feb 2024, 11:57 AM
ইউক্রেইনে রাশিয়ার আক্রমণের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ও দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে মস্কোর বিরুদ্ধে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার নতুন করে আরোপ করা এ নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যস্থল করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘বিদেশে তার আগ্রাসন ও দেশে দমন-পীড়নের জন্য আরও বেশি মূল্য দেওয়া’ নিশ্চিত করতেই এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মির পেমেন্ট সিস্টেম, ব্যাংক, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সামরিক শিল্প, ভবিষ্যৎ জ্বালানি উৎপাদন ও অন্য আরও বহু ক্ষেত্রকে লক্ষ্যস্থল করা হয়েছে। রাশিয়ার কারা কর্মকর্তাদেরও এবারের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রাখা হয়েছে, নাভালনির মৃত্যু সঙ্গে এদের সম্পর্ক আছে বলে দাবি মার্কিন কর্মকর্তাদের; জানিয়েছে রয়টার্স।
পরে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার নেতৃস্থানীয় তেলবাহী ট্যাংকার গোষ্ঠী সভকোমফ্লোতের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই গোষ্ঠীটি রাশিয়ার তেলের ওপর জি৭ এর বেঁধে দেওয়া দর লঙ্ঘনের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ ওয়াশিংটনের। পাশাপাশি গোষ্ঠীটির ১৪টি অপরিশোধিত তেল বহনকারী ট্যাংকারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় রাশিয়ার প্রায় ৩০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৫০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৯০টিরও বেশি কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর আরোপ করা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়ানোয় সহযোগিতার দায়ে চীন, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাজাখস্তান ও লিচেনস্টোইন ভিত্তিক কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ওয়াশিংটনের চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লু পাঙ্গইউ চীনের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অর্থনৈতিক জবরদস্তি, একতরফাবাদ ও উৎপীড়নের একটি সাধারণ পদক্ষেপ’ উল্লেখ করে এর নিন্দা করেছেন।
শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ব্রিটেন ও কানাডাও রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে হামলা শুরু করার পর থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে হাজার হাজার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদেশগুলো। দুই বছর ধরে চলা ইউক্রেইনের যুদ্ধে লাখো মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি বহু শহর ধ্বংস হয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেশগুলো ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাশিয়াকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করলেও তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। দুই বছর ধরে বজায় থাকা নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার রপ্তানি-কেন্দ্রীক ২ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি আরও সবল হয়ে উঠেছে বলে প্রমাণ মিলেছে। এমনটি হবে তা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা পশ্চিমা দেশগুলোতো অবশ্যই, রাশিয়া নিজেও ধারণা করেনি।
এই উদাহরণ সামনে রেখেই নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনোভ নিজেদের দূতাবাস চ্যানেলের টেলিগ্রাম অ্যাপে বলেছেন, “নিষেধাজ্ঞা আমাদের দুর্বল করে না এটা কি ওয়াশিংটন বোঝে না?”
আরও পড়ুন:
সমাহিত করতে হবে ‘গোপনে’, নাভালনির মাকে ৩ ঘণ্টার আলটিমেটাম