স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দুই দেশের মধ্যে এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী চুক্তি বলে মনে করা হচ্ছে।
Published : 19 Jun 2024, 07:05 PM
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন একটি নতুন অংশীদারিত্ব চুক্তি সই করেছেন। এতে তারা আগ্রাসনের মুখোমুখি হলে একে অপরকে রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছেন।
পশ্চিমাদের সঙ্গে দেশ দুটির অচলাবস্থা বাড়তে থাকার মধ্যে এই চুক্তি হল। চুক্তির বিস্তারিত খুঁটিনাটি তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট জানা যায়নি। তবে স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী চুক্তি বলে মনে করা হচ্ছে।
দুই দেশের নেতাই এই চুক্তিকে তাদের সম্পর্কের বড় ধরনের উন্নতি বলে বর্ণনা করেছেন; যার আওতায় আছে নিরাপত্তা, বাণিজ্য থেকে শুরু করে বিনিয়োগ এবং সাংস্কৃতিক ও মানবিক সবধরনের বন্ধন।
কিম বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ বন্ধুত্ব ছিলই। আর এখন যে চুক্তি হল তা তাদের মধ্যকার এযাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী চুক্তি। এর ফলে রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া সম্পর্ক মৈত্রীবন্ধনের পর্যায়ে পৌঁছে গেল।
ইউক্রেইনে রাশিয়ার যুদ্ধকে পুরোপুরি সমর্থনের অঙ্গীকার করেছেন কিম। ওদিকে, পুতিন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে চুক্তিকে ‘যুগান্তকরী দলিল’ আখ্যা দিয়েছেন। এতে সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে দুই দেশেরই আগ্রহের প্রতিফলন ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
১৯৬১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে উত্তর কোরিয়া একটি চুক্তি সই করেছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর কোরিয়া হামলার শিকার হলে রাশিয়ার সামরিক হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা থেকে ওই চুক্তি করা হয়েছিল।
কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের (ইউএসএসআর) পতনের পর সেই চুক্তি ভেস্তে যায়। এরপর ২০০০ সালে ওই চুক্তির জায়গায় আরেকটি চুক্তি হলেও সেটি নিরাপত্তার নিশ্চয়তার ক্ষেত্রে ততটা জোরাল ছিল না।
এবারে পুতিন এবং কিম যে অংশীদারিত্ব চুক্তি করেছেন সেটি ১৯৬১ সালের সেই চুক্তির পর্যায়ের সুরক্ষা দেবে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে পুতিন পিয়ংইয়ং পৌঁছান। এ সময় কিম বিমানবন্দরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে জড়িয়ে ধরে স্বাগত জানান। ২৪ বছরের মধ্যে পুতিন এই প্রথম উত্তর কোরিয়া সফরে গেলেন।
উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া, উভয়েই কূটনৈতিকভাবে বাকি বিশ্ব থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে, এ পরিস্থিতিতে পুতিনের এই সফরে দুই দেশের কয়েক দশকের সম্পর্ক নতুন আকার পাচ্ছে।
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের জন্য পুতিনের এই সফর গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। কারণ, রাজনৈতিকভাবে বাকি বিশ্ব থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়ায় ২০১৯ সালে করোনাভাইরাস মহামারীর পর থেকে এ পর্যন্ত কোনও বিশ্ব নেতা ভ্রমণ করেননি।
উত্তর কোরিয়া সফর শেষের পর ভিয়েতনামে সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের।