চীনকে ঠেকাতে জাহাজ-বিধ্বংসী ৪শ’ মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র কিনছে তাইওয়ান

গত ৭ এপ্রিল ক্রেতার নাম না জানিয়ে এই ৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য ১১৭ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তির কথা ঘোষণা করে পেন্টাগন।

রয়টার্স
Published : 18 April 2023, 04:42 PM
Updated : 18 April 2023, 04:42 PM

চীনের বাড়তে থাকা হুমকি মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৪০০ জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে চলেছে তাইওয়ান।

সোমবার সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো হচ্ছে স্থল-চালিত হারপুন ক্ষেপণাস্ত্র।

ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর এক নেতা এবং তাইওয়ানের ক্ষেপণাস্ত্র কেনার বিষয়টি জানেন এমন ব্যক্তিদের বরাতে ব্লুমবার্গ এ তথ্য দিয়েছে।

গত ৭ এপ্রিল ক্রেতার নাম না জানিয়ে ওই ৪০০টি ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য ১১৭ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তির কথা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন।

২০২৯ সালের মার্চের মধ্যে এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি শেষ হবে বলে ধারণা প্রকাশ করেছে তারা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ বলছে, এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর ক্রেতা তাইওয়ান।

পেন্টাগন এ চুক্তির বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে বলেছে, “তাইওয়ানকে যথেষ্ট প্রতিরক্ষা-সমক্ষমতা বজায় রাখতে সক্ষম করে তোলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং সেবা দেয়।”

এর আগে ২০২০ সালে তাইওয়ান বলেছিল, তারা সামরিক আধুনিকীকরণ প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে বোয়িং-নির্মিত স্থল-ভিত্তিক হারপুন জাহাজ-বিধ্বংসী মিসাইল কেনার পরিকল্পনা করেছে।

ইউএস-তাইওয়ান বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট রুপার্ট হ্যামন্ড-চেম্বার্সের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাইওয়ানের পক্ষে ইউএস নেভাল এয়ার সিস্টেম কমান্ডের জারি করা বোয়িং-এর সাথে চুক্তির ফলে তাইওয়ান প্রথম এই ক্ষেপণাস্ত্রের ভ্রাম্যমাণ স্থল-চালিত সংস্করণ পাবে।

এর আগে তাইওয়ান এ ক্ষেপণাস্ত্রের জাহাজ থেকে নিক্ষেপযোগ্য সংস্করণ কিনেছিল।

এমাসেই যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ​​ইং-ওয়েন। সফরকালে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে বৈঠক করেন।

চীন সাইয়ের এ সফরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তাইওয়ান ঘিরে ব্যাপক পরিসরে সামরিক মহড়া চালিয়ে। চীনের এমন হুমকির মুখেই তাইওয়ানের অস্ত্র কেনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন প্রেসিডেন্ট সাই।

ম্যাকার্থির সঙ্গে বৈঠকের পর ‘হাউজ সিলেক্ট কমিটি অন দ্য চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি’র রিপাবলিকান চেয়ারম্যান মাইক গ্যালাঘের বলেছেন, সৌদি আরবে তার নির্ধারিত সফরের আগে তাইওয়ানকে হারপুন জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার উপায় খুঁজতে চান তিনি।

চীন তাইওয়ানকে তাদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে আসছে। ‘এক চীন নীতি’র অধীনে তারা তাইওয়ানকে একদিন নিজেদের সঙ্গে একীভূত করতে বদ্ধপরিকর।

তবে তাইওয়ান মনে করে তারা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। তাদের নিজস্ব সংবিধান আছে এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা আছে।

যুক্তরাষ্ট্র এক চীন নীতি সমর্থন করলেও তাইওয়ানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং তাদেরকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিচ্ছে।

সম্প্রতি কয়েকবছরে চীন তাইওয়ানের ওপর সামরিক চাপ বাড়িয়েছে। তাইওয়ান ঘেঁষে দফায় দফায় জঙ্গি জঙ্গি বিমান এবং নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠিয়েছে চীন।