ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েলে নিউ জিল্যান্ডে নিহত ৩

এ ঘূর্ণিঝড়কে ‘এক প্রজন্মের মধ্যে দেখা যায়নি’ এমন একটি আবহাওয়া ঘটনা বলে বর্ণনা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2023, 07:00 AM
Updated : 15 Feb 2023, 07:00 AM

নিউ জিল্যান্ডের নর্থ আইল্যান্ডে কয়েকদিন ধরে তাণ্ডব চালানো ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েলে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স এ ঘূর্ণিঝড়কে ‘এক প্রজন্মের মধ্যে দেখা যায়নি’ এমন একটি আবহাওয়া ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন।

এর আগে হিপকিন্স সরকার দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে, যা নিউ জিল্যান্ডের ইতিহাসে তৃতীয় ঘটনা মাত্র। দেশটির ৫১ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে এক তৃতীয়াংশ ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকাগুলোতে বসবাস করেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বুধবার ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে নর্থ আইল্যান্ড থেকে আরও দূরে সরে গেছে। কিন্তু বহু মানুষকে বাস্তুচ্যুত করে রেখে গেছে।

নদীর পানি তীর ছাপিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ার পর প্রাণ বাঁচাতে কিছু মানুষ সাঁতার কেটে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বাধ্য হন। অন্যদের বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়।

বুধবার শেষ খবর পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় ছিলেন। লোকজনকে সতর্ক করে এ পরিস্থিতি কয়েক সপ্তাহ ধরে বজায় থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

ঝড়ে বহু গাছ উপড়ে পড়েছে, অনেকগুলো বাড়ি এসব গাছের নিচে চাপা পড়েছে। ভূমিধসে অনেক বাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং বহু সড়ক পাথর ও মাটির নিচে চাপা পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে।

ঝড়ে নর্থ আইল্যান্ডের সর্ব উত্তর ও পূর্ব উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকাগুলোর মধ্যে হকস বে, করোম্যান্ডেল এবং নর্থল্যান্ড সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।   

ওই অঞ্চলের এক নদীর পানি পাড় উপচে লোকালয় ভাসিয়ে নিলে ছোট একটি শহর পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। 

ওই অঞ্চলের বেসামরিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ক্ষয়ক্ষতির মাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছেন না। অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য তাদের সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। 

হকস বে এলাকায় দুটি মৃত্যু হয়েছে বলে বুধবার নিশ্চিত করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, অকল্যান্ডের পশ্চিমে মুরিওয়াইতে ভূমিধসের মধ্যে আটকা পড়ে নিখোঁজ হওয়া দমকল কর্মীর মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছে তারা। ওই ঘটনায় দ্বিতীয় আরেকজন দমকল কর্মী আহত হয়ে সঙ্কটজনক অবস্থায় আছেন বলে উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো জানিয়েছে।

গণমাধ্যমে আসা ফুটেছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখা গেছে। উপড়ে পড়া সারি সারি গাছ পড়ে আছে, রাস্তার সড়কবাতির খুঁটিগুলো বাঁকা হয়ে গেছে আর বহু বাড়ি পানির নিচে ডুবে আছে।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী হিপকিন্স বলেছেন, “এক প্রজন্মেও এ রকম প্রবল ঝড় ও ক্ষয়ক্ষতির অভিজ্ঞতা হয়নি। বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে আর তাতে ক্ষয়ক্ষতির পুরো চিত্র উন্মোচিত হতে শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড়টিতে যে ব্যাপক ও উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত আমরা।”

দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৭৩ লাখ ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার সকালে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে জরুরি ব্যবস্থাপনামন্ত্রী কিরান ম্যাকঅ্যানাল্টি ঝড়টিকে ‘নজিরবিহীন’ বলে বর্ণনা করেছিলেন।

নিউ জিল্যান্ড এর আগে ২০১১ সালে একটি ভূমিকম্পের পর প্রথমবার এবং ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারীর সময় দ্বিতীয়বার জরুরি অবস্থা জারি করেছিল। 

আগের খবর:

Also Read: ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েল: নিউ জিল্যান্ডে জরুরি অবস্থা ঘোষণা