গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্রাসাদের হলে অনুষ্ঠিত এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বয়কট করেছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য,কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশির ভাগ দেশ।
Published : 07 May 2024, 07:21 PM
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসাবে ভ্লাদিমির পুতিন নতুন ছয় বছর মেয়াদের জন্য পঞ্চমবারের মতো শপথ নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও এর অন্যান্য মিত্রদেশগুলোর নেতাদের এ অনুষ্ঠান বয়কটের মধ্যেও মঙ্গলবার শপথ গ্রহণ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানটি গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্রাসাদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৭১ বছর বয়সী এই নেতা হেঁটে সেন্ট অ্যান্ড্রু’স থ্রোন হলে যান। সেখানেই তিনি শপথ নেন।
লাল গালিচায় হাঁটা পথটি পুতিনের কাছে পরিচিত হতে পারে। কিন্তু ২০০০ সালের মে মাসে পুতিনের প্রথম শপথ গ্রহণের সেই সময় থেকে আজ এতদিন পরে এসে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়ে গেছে।
আগে পুতিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথের সময় গণতন্ত্র উন্নয়ন ও সুরক্ষার কথা বলতেন। রাশিয়ার দেখভাল করার কথা বলতেন। কিন্তু আজ ২৪ বছর পর পুতিন ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছেন, যাতে রাশিয়ার অনেক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
ঘরে গণতন্ত্রের পরিবেশ উন্নয়নের পরিবর্তে বরং তা আরও কমাচ্ছেন। সমালোচকদের জেল দিচ্ছেন। ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার সবকিছুই তিনি অপসারণ করছেন।
ইউক্রেইনে দুইবছরেরও বেশি সময়ের যুদ্ধের পর নতুন মেয়াদে শপথের ভাষণে পুতিন রিুশ সেনাদের কাছে মাথা নত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
ঘোষণা দিয়ে তিনি ভাষণে এও বলেছেন, রাশিয়ায় গত মার্চ মাসের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হিসাবে তার পুননির্বাচিত হওয়া এটিই প্রমাণ করেছে যে, দেশ একতাবদ্ধ এবং সঠিক পথেই আছে।
শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, “আমরা ঐক্যবদ্ধ মানুষ। আমরা একসঙ্গে সব বাধা জয় করব। আমাদের সব পরিকল্পনা ফলপ্রসু করব। আমরা একসঙ্গে জিতব।”
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে আছেন পুতিন। পশ্চিমারা রাশিয়াকে পরাজিত করতে ইউক্রেইনকে বাহন হিসাবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
তবে প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানের ভাষণে পুতিন বলেছেন, তিনি পশ্চিমাদের সঙ্গে এমনকী পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে আলোচনায় বসার সম্ভাবনাও প্রত্যাখ্যান করছেন না।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট কিংবা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ১৯৯৯ সাল থেকেই ক্ষমতায় আছেন পুতিন। এবারের নতুন ছয় বছর মেয়াদ শেষ করতে পারলে তিনি আবার নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন।
গত মার্চে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৮৭.২৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন পুতিন। নির্বাচনে ইউক্রেইন যুদ্ধবিরোধী দুই প্রার্থীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। বিরোধীরা এই নির্বাচনকে লজ্জাজনক আখ্যা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, রাশিয়ার ওই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু বলে তারা বিবেচনা করে না। তাই মঙ্গলবার পুতিনের শপথ অনুষ্ঠান তারা বয়কট করেছে। যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বেশির ভাগ দেশও শপথ অনুষ্ঠান বয়কট করেছে। তবে ফ্রান্স শপথ অনুষ্ঠানে তাদের রাষ্ট্রদূতকে পাঠিয়েছে।