এ উদ্যোগে ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে তিন বছর ধরে চলা ওয়াশিংটনের নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
Published : 13 Feb 2025, 11:46 AM
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি উভয়েই শান্তির প্রতি আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনল্ড ট্রাম্প এমনটি জানিয়েছেন। তিনি ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসানে আলোচনা শুরু করার জন্য শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে ট্রাম্পের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, কিইভকে নেটো সামরিক জোটে যোগ দেওয়ার এবং রাশিয়া তাদের যে অঞ্চলগুলো দখল করে নিয়েছে সেগুলো পুনরুদ্ধারের চেষ্টা বাদ দিতে হবে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই মন্তব্যে ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে তিন বছর ধরে চলা ওয়াশিংটনের নীতিতে নাটকীয় পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
বুধবার ট্রাম্প জানান, তিনি ফোনে পুতিনের সঙ্গে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কথা বলেছেন। “আমার মনে হয় আমরা শান্তির পথে আছি,” বলেছেন তিনি। রাশিয়ার নেতা যুদ্ধ শেষ করতে চান এবং তারা ‘অদূর ভবিষ্যতে একটি যুদ্ধবিরতি করা’ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ট্রাম্প হোয়াইট হাউজের ওভাল দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, “তিনি এটি শেষ করতে চান। তিনি এটি শেষ করে আবার ছয় মাস পর যুদ্ধে ফিরতে চান না। আমার মনে হয় আমরা শান্তির পথে আছি।
“আমার মনে হয় প্রেসিডেন্ট পুতিন শান্তি চান, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি শান্তি চান এবং আমি শান্তি চাই। আমি শুধু দেখতে চাই মানুষ হত্যা বন্ধ হচ্ছে।”
রয়টার্স লিখেছে, ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন তিনি দ্রুত ইউক্রেইন যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন। তবে কীভাবে তা করবেন সেটি পরিষ্কার করেননি।
এর আগে ক্রেমলিন জানায়, পুতিন ও ট্রাম্প সাক্ষাৎ করার বিষয়ে সহমত হয়েছেন এবং পুতিন ট্রাম্পকে মস্কোতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ট্রাম্প বলেছেন, তাদের প্রথম বৈঠক ‘সম্ভবত’ শিগগিরই সৌদি আরবে হবে।
নিজের সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ এ করা পোস্টে ট্রাম্প জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসানের আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন।
পুতিনের সঙ্গে কথা বলার পর ট্রাম্প ফোনে জেলেনস্কির সঙ্গেও কথা বলেছেন। জেলেনস্কির দপ্তর জানিয়েছে, দুই প্রেসিডেন্ট প্রায় এক ঘণ্টা ধরে কথা বলেছেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া ইউক্রেইন যুদ্ধের তিন বছর পূর্তি হবে চলতি মাসে। এই তিন বছরের মধ্যে এই যুদ্ধ অবসানে কোনো শান্তি আলোচনা হয়নি। ট্রাম্পের পূর্বসূরী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পুতিনের সঙ্গে সরাসরি কোনো আলোচনা করেননি বরং কিইভকে শত শত কোটি ডলারের সামরিক ও অন্যান্য সহায়তা পাঠিয়েছেন।
রাশিয়া এ পর্যন্ত ইউক্রেইনের মোট আয়তনের প্রায় এক পঞ্চমাংশ দখল করে নিয়েছে এবং কিইভকের কাছে আরও ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে। যে কোনো শান্তি চুক্তির অধীনে ইউক্রেইনকে স্থায়ীভাবে নিরপেক্ষ থাকতে হবে বলে শর্ত দিয়েছে মস্কো।
অপরদিকে ইউক্রেইনের দাবি হচ্ছে, রাশিয়া দখল করে নেওয়া অঞ্চলগুলো থেকে সরে যাবে এবং মস্কোকে আবার হামলা চালানো থেকে বিরত রাখতে কিইভকে নেটোর সদস্যপদ বা এর সমপর্যায়ের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে হবে।
ব্রিটেনে, ফ্রান্স ও জার্মানিসহ, ইউরোপীয় শক্তিগুলো বুধবার বলেছে, ইউক্রেইনের ভবিষ্যৎ নিয়ে যে কোনো আলোচনার তাদেরও রাখতে হবে।