হোম্যান আগে পুলিশ কর্মকর্তা এবং ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট’ এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ছিলেন। অভিবাসী বিতাড়নসহ সীমান্ত রক্ষার সব দায়িত্ব তাকেই দিচ্ছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
Published : 11 Nov 2024, 07:34 PM
যুক্তরাষ্ট্রে গত ৫ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় রিপাবলিকান ডনাল্ড ট্রাম্প জোর দিয়েছিলেন দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা ও অবৈধ অভিবাসী বিতাড়ন নীতির ওপর। এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরই তিহনি ‘সীমান্ত সম্রাট’ (বর্ডার জার) হিসেবে টম হোম্যানকে নিযুক্ত করলেন।
৬২ বছর বয়সি হোম্যান আগে পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন এবং ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে অভিবাসন কর্মকর্তাও ছিলেন। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসাবে কাজ করেছিলেন তিনি।
ট্রাম্প রোববার তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে এক পোস্টে বলেছেন, “ট্রাম্প প্রশাসনে যোগ দেবেন হোম্যান। তিনি দেশের সীমান্ত দেখাশোনার দায়িত্বে (বর্ডার জার) থাকবেন। তিনি দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত, উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত, সমুদ্র সীমান্ত এবং বিমান চলাচলের নিরাপত্তা সবকিছুই দেখবেন।
“একইভাবে সব অবৈধ ভিনদেশীকে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর দায়িত্বও থাকবে তার ওপর। টমকে অভিনন্দন। আমি নিঃসন্দেহে বলতে পারি তিনি খুব চমৎকার কাজ করবেন”, বলেন ট্রাম্প।
নির্বাচনি প্রচারকালে ট্রাম্প বলে এসেছেন, তার অভিবাসী বিতাড়ন কর্মসূচি হবে আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড়। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলা শেষ করার পরিকল্পনাও জানিয়েছিলেন তিনি। এবার টম হোম্যানকে নিয়োগ করে সীমান্ত নিরাপত্তা এবং অভিবাসন বিতাড়ন নীতির ব্যাপক পরিসরের দায়িত্ব যে তাকে দেওয়া হচ্ছে, সেকথা নিশ্চিত করেই জানালেন ট্রাম্প।
বিবিসি জানায়, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে হোম্যান পদত্যাগ করেছিলেন ২০১৮ সালে। তবে তিনি ট্রাম্পের কট্টর দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষে ছিলেন। অবৈধ অভিবাসীদের সীমান্ত পারাপার ঠেকাতে শিশুদেরকে তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে আলাদা করার নীতিও তিনি সমর্থন করেছিলেন।
তাছাড়া, যেসব রাজনীতিবিদ অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়ার নীতি সমর্থন করে তাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আনা উচিত বলেও হোম্যান মন্তব্য করেছিলেন। তিনি আমেরিকার রক্ষণশীল পাবলিক পলিসি রিসার্চ অর্গানাইজেশন, বা গবেষণা ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান (থিঙ্ক ট্যাংক) ‘হেরিটেজ ফাউন্ডেশন’-এর একজন ভিজিটিং ফেলো।
এই থিংক ট্যাংক সেই পুরোনো আমল থেকে ভাবি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টদের জন্য নীতি পরিকল্পনা তৈরি করে আসছে। ১৯৮১ সালে রোনাল্ড রিগান প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে দিয়ে তার জন্য নীতি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিল হেরিটেজ ফাউন্ডেশন। পরবর্তী বিভিন্ন নির্বাচনে জয়ী প্রেসিডেন্টদের জন্যও একইরকম ডকুমেন্ট তৈরি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এবার ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার আগেও হেরিটেজ ফাউন্ডেশন ‘প্রজেক্ট ২০২৫ ডকুমেন্ট’ প্রকাশ করেছে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে তারা এই প্রজেক্ট প্রকাশ করে। এই প্রজেক্ট হচ্ছে ৯০০ পাতার একটি একটি তালিকা যেখানে একাধিক নীতিমালার প্রস্তাব রাখা হয়। যেসব নীতি নিলে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা প্রসারিত হবে।
এবারের প্রজেক্ট ২০২৫- এ প্রতিষ্ঠানটি বিচার বিভাগের মতো স্বতন্ত্র সংস্থাগুলো-সহ গোটা কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র প্রেসিডেন্টের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রস্তাব করেছে। এটি একটি বিতর্কিত প্রস্তব। ট্রাম্প অবশ্য এখন পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠান থেকে নিজেকে দূরেই সরিয়ে রেখেছেন।