কিন্তু রাজপরিবারকে অপমান নিষিদ্ধ আইনের সংস্কারে দলের যে পরিকল্পনা তা থেকে তিনি পিছু হটবেন না বলেও জানিয়েছেন।
Published : 18 Jul 2023, 04:13 PM
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হতে চাওয়া পিটা লিমজারোয়েনরাত বলেছেন, সরকার গঠন করতে পারলে রাজনৈতিক সংস্কার বিষয়ে তার দলের যে উচ্চাকাঙ্ক্ষী এজেন্ডা রয়েছে তা নিয়ে তিনি ধীরগতিতে অগ্রসর হতে আগ্রহী।
কিন্তু রাজপরিবারকে অপমান নিষিদ্ধ আইনের সংস্কারে দলের যে পরিকল্পনা তা থেকে তিনি পিছু হটবেন না বলেও জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চলতি বছর দেশটিতে হওয়া সাধারণ নির্বাচনে জয়ী মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির নেতা এ কথা বলেন।
তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে সামরিকতন্ত্রের বাধা দেওয়ার যে চেষ্টা তাকে ‘ভাঙা রেকর্ড’ অভিহিত করে পিটা বলেছেন, থাইল্যান্ড এক ভিন্ন যুগে প্রবেশ করেছে যেখানে লোকজন পরিবর্তনের জন্য মুখিয়ে আছে।
৪২ বছর বয়সী পিটা বুধবার প্রধানমন্ত্রী হতে পার্লামেন্টে দ্বিতীয় দফা ভোটের মুখোমুখি হবেন। রক্ষণশীল, সামরিক বাহিনীর নিয়োগ দেওয়া অধিকাংশ সেনেটরের বিরোধিতায় গত সপ্তাহে তিনি প্রথম দফার ভোটে প্রধানমন্ত্রী হতে প্রয়োজনীয় অর্ধেকের বেশি আইনপ্রণেতার সমর্থন জিততে পারেননি।
“এটা পুরোপুরি প্রত্যাশিত ছিল, একই জিনিস, একই স্থান। ভাঙা রেকর্ড। কিন্ত এই যুগের মনোভাব বদলে গেছে।
“কাল যা-ই হোক না কেন, সমাজ অগ্রসর হচ্ছে। তারা নতুন, তরতাজা কিছু চাইছে,” বলেছেন পিটা।
চলতি বছরের ১৪ মার্চের নির্বাচনে মুভ ফরোয়ার্ডের জয় অনেককেই বিস্মিত করেছে। রক্ষণশীল প্রার্থীদের পরাজিত করতে তারা বিপুল সংখ্যক তরুণের সমর্থন পেয়েছে, যাকে একই সঙ্গে এক দশক ধরে দেশ শাসন করা সামরিক বাহিনী বা তাদের সমর্থিত সরকারগুলোর প্রতি প্রত্যাখ্যানের বার্তা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
মুভ ফরোয়ার্ডের সংস্কার পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে আছে একচেটিয়া ব্যবসাকাঠামো ভেঙে দেওয়া, সামরিক বাহিনীতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া এবং জেনারেলদের রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। তবে তারা সবচেয়ে বেশি চাইছে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১১২ অনুচ্ছেদের পরিবর্তন, যে অনুচ্ছেদে রাজপরিবারকে অপমানে ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
পিটা বলছেন, এসব সংস্কারের বিষয়ে তার অবস্থান নমনীয়, তাছাড়া চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তো পার্লামেন্টই নেবে। কিন্তু সহজে প্রধানমন্ত্রী হতে বা সরকার গঠনের স্বার্থে তারা তাদের এসব সংস্কারের এজেন্ডাকে বাদ দেবেন না।
অনুচ্ছেদ ১১২-র সংস্কার রাজপরিবারের জন্য হুমকি নয়, বরং এটি রাজপরিবার যেন রাজনীতিতে জড়িয়ে না যায় তা এবং শত শত লোকের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত আইনটির অপব্যবহার যেন না হয় তা নিশ্চিত করবে, বলেছেন মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির এ নেতা ।
সমালোচকরা বলছেন, দশকের পর দশক ধরে থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী রাজপরিবারের সুরক্ষায় তাদের কর্তব্যকে সামনে এনে রাজনীতিতে নিজেদের হস্তক্ষেপকে বৈধতা দিয়েছে এবং রাজপরিবারকে অপমান নিষিদ্ধের আইনকে ভিন্নমত দমনে কাজে লাগিয়েছে।
“ভোটারদের কাছে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, প্রতিষ্ঠান রাজনীতির ওপরে থাকবে, সেই প্রতিশ্রুতিতে আমি অটল থাকবো। দেশ চালানোর এটিই একমাত্র উপায়।
“আমি যদি এই ইস্যুটি ছেড়ে দিই তাহলে আমি তাদের (ভোটার) চোখের দিকে তাকাতে পারবো না,” বলেছেন পিটা।