পুতিন যখন ইউক্রেইনের চারটি অংশকে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করার ডিক্রিতে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছেন তখন রুশ বাহিনী এ বিপর্যয়ের শিকার হল।
Published : 05 Oct 2022, 12:17 PM
দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রাম পুনরুদ্ধার করেছে ইউক্রেইনীয় সেনারা, রুশ সেনারা পিছু হটার পর দ্রুত সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা।
কিইভের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি ভিডিও পোস্ট করেছে, তাতে আশপাশের কয়েকটি গ্রাম পুনরুদ্ধারের খবরের মধ্যে ৩৫তম মেরিন বিগ্রেডকে দাভাইদিভ ব্রিদ গ্রামে ইউক্রেইনীয় পতাকা তুলতে দেখা গেছে।
ইতোমধ্যেই ইউক্রেইনের উত্তরপূর্বাঞ্চল থেকে রুশ বাহিনীগুলোকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে ইউক্রেইনীয় সেনারা, এখন দক্ষিণেও তারা পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
তাদের সর্বশেষ বিপর্যয় এমন এক সময়ে ঘটল যখন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যখন ইউক্রেইনের চারটি অংশকে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করার ডিক্রিতে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছেন, যদিও ওই চার অঞ্চলেই যুদ্ধ চলছে।
বিবিসি বলছে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ওই চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার ভূখণ্ডভুক্ত করার কোনো বৈধতা নেই এবং ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ প্রচেষ্টাকে অকার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই রাশিয়ার অর্ন্তভুক্তির স্বীকৃতি দেবে না বলে নিশ্চিত করেছেন। তারা ইউক্রেইনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ৬২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের সহায়তা নিয়েও কথা বলেছেন। এই সহায়তায় মার্কিন হিমার্স রকেট লঞ্চারও অর্ন্তভুক্ত।
রাশিয়ার এখনও দক্ষিণে আঞ্চলিক রাজধানী খেরসন শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে, কিন্তু দনিপার নদীর (ইউক্রেইনীয় উচ্চারণে নিপ্রো) উত্তরের পুরো এলাকায় তাদের অবস্থান ক্রমেই নড়বড়ে দেখাচ্ছে।
গত ৪৮ ঘণ্টায় ইউক্রেইনীয় বাহিনীগুলো রুশ বাহিনীকে তাড়া করে নদীটির পশ্চিম তীর ধরে দক্ষিণে এগিয়ে গেছে আর খেরসন অঞ্চলের উত্তরে থাকা বেশ কয়েকটি বসতি থেকে রুশ বাহিনী এখন পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে।
জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেইনীয় বাহিনীগুলো চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেইনের দক্ষিণাঞ্চলে ‘দ্রুত ও প্রবল তৎপরতা’ চালিয়ে ‘বহু বসতি’ মুক্ত করেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, “দাভাইদিভ ব্রিদ গ্রামে ফেল ইউক্রেইনের পতাকা উড়ছে।”
ইউক্রেইনীয় সেনারা গ্রামের ভেতর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে, এমন ভিডিও পোস্ট করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার রাতের ভিডিও ভাষণে জেলেনস্কি ৭টি গ্রামের নাম উল্লেখ করে সেগুলো মুক্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেন এবং মুক্ত করা গ্রামগুলোর ‘পুরো তালিকা আরও বড়’ বলে উল্লেখ করেছেন।
ইউক্রেইনের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভান ইয়েনিন বলেছেন, খেরসনের ৫০টি শহর ও গ্রাম পুনরুদ্ধার করে ৩৫০০ নাগরিককে মুক্ত করা হয়েছে; তবে কখন এটি ঘটেছে তা উল্লেখ করেননি তিনি।
পরে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়ার বাহিনীগুলো হতাশ হয়ে পড়েছে এবং ইউক্রেইনীয় বাহিনীর অগ্রগতি কমিয়ে দিতে বিভিন্ন সেতু ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।
তবে খেরসনে মস্কোর নিযুক্ত কর্মকর্তা কিরিল স্ত্রিমোউসভ স্থানীয় বাসিন্দাদের বলেছেন, “ইউক্রেইনীয় বাহিনী এগিয়ে এলেও আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।”
দাভাইদিভ ব্রিদের উত্তরপূর্বের গ্রামগুলোরও পতন হয়েছে কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা নিশ্চিত করা হয়নি এবং সেখানে তাদের কোনো পরাজয় ঘটেছে এমন কিছুও উল্লেখ করেননি রুশ সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র।
আরও পড়ুন: