দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কোয়েবেরার কাছে তাকে বহন করা গাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।
Published : 17 Feb 2025, 06:26 PM
জনসমক্ষে নিজেকে সমকামী বলা বিশ্বের প্রথম ইমাম মুহসীন হেনড্রিক্সকে দক্ষিণ আফ্রিকায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
৫৭ বছর বয়সী হেনড্রিক্স কেপ টাউনে যে মসজিদ চালাতেন সেটি সমকামী ও প্রান্তিক মুসলমানদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় হয়ে উঠেছিল।
শনিবার স্থানীয় সময় সকালে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কোয়েবেরার কাছে তাকে বহন করা গাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়, জানিয়েছে বিবিসি।
“মুখ ঢাকা দুই অজ্ঞাত সন্দেহভাজন একটি গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে (হেনড্রিক্সকে বহন করা) গাড়ি লক্ষ্য করে গুলির পর গুলি ছোড়া শুরু করেন,” এক বিবৃতিতে এমনটাই বলেছে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ।
হেনড্রিক্সের মৃত্যুর খবর এলজিবিটি সম্প্রদায় এবং অন্যদের মধ্যেও শোকের ছায়া ফেলেছে, খবর পেয়ে তার পরিবারের কাছে শোকবার্তা পাঠাচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।
“আমরা ধারণা করছি এটি সম্ভবত একটি বিদ্বেষমূলক অপরাধ,” কর্তৃপক্ষকে ঘটনার বিস্তৃত তদন্তের অনুরোধ জানিয়ে এমনটাই বলেছেন ইন্টারন্যাশনল লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল, ট্রান্স অ্যান্ড ইন্টারসেক্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইলগা) নির্বাহী পরিচালক লিয়া ইয়োলিয়া এরট।
দুই সমকামী নারীর মধ্যে বিয়ে পড়িয়েছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর হেনড্রিক্সকে হত্যা করা হয় বলে খবর চাউর হলেও কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হেনড্রিক্স যে গাড়িতে ছিলেন, অন্য একটি গাড়ি এসে সেটি আটকে দেয়। এরপর এক হামলাকারী তাদের গাড়ি থেকে বেরিয়ে ছুটে এসে হেনড্রিক্সকে বহন করা গাড়িটির পেছনদিকে যাত্রী জানালা বরাবার একাধিক গুলি ছোড়েন।
হেনড্রিক্স গাড়ির পেছনের সিটেই ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হেনড্রিক্সের আল-গুরবাহ ফাউন্ডেশনই কেপ টাউনের ওয়েনবার্গে মসজিদুল গুরবাহ নামে একটি মসজিদ চালায়।
পরে আল-গুরবাহ ফাউন্ডেশনও সমকামী ইমামের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছে, শনিবার সকালে পরিকল্পিত এক হামলায় হেনড্রিক্সের মৃত্যু হয়।
হেনড্রিক্স ১৯৯৬ সালে প্রকাশ্যে নিজেকে সমকামী বলে ঘোষণা দেন, তার এ ঘোষণা কেপ টাউন ও অন্যত্র মুসলিম সম্প্রদায়কে হতবাক করে দেয়।
একই বছর হেনড্রিক্স ইনার সার্কেল নামে একটি সংস্থা বানান যা সমকামী মুসলমানদের সহায়তা ও নিরাপদ স্থানের ব্যবস্থা করে দিত। এরপর তিনি হাত দেন গুরবাহ মসজিদ বানানোর কাজে।