পুলিশ কর্মকর্তারা এখন বলছেন, তারা মিরেবালাইসের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছেন; যদিও পলাতক কয়েদিদের অনেকে এখনও শহরের সড়কগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে স্থানীয় একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।
Published : 01 Apr 2025, 08:39 PM
ক্যারিবীয় দেশ হাইতির মধ্যাঞ্চলীয় শহর মিরেবালাইসে আচমকা হামলা চালিয়ে জেল থেকে প্রায় ৫০০ কয়েদিকে মুক্ত করে দিয়েছে গ্যাং সদস্যরা।
সোমবার এ ঘটনা ঘটেছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
দেশটির ন্যাশনাল পুলিশের এক মুখপাত্র পরে বলেছেন, তারা রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের ৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত শহরটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করেছেন।
পুলিশ কর্মকর্তারা এখন বলছেন, তারা মিরেবালাইসের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছেন; যদিও পলাতক কয়েদিদের অনেকে এখনও শহরের সড়কগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে স্থানীয় একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।
হাইতির রাজধানীর প্রায় পুরোটাই একাধিক সশস্ত্র গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণে, কিন্তু সোমবারের হামলায় মনে হচ্ছে ওই গ্যাংগুলো এখন দেশের অন্যান্য শহরকেও তাদের নিশানা বানাচ্ছে।
মিরেবালাইস দুটি প্রধান সড়কের সংযোগস্থলে অবস্থিত, এই সড়কগুলোর মধ্যে একটি গেছে উত্তরে, পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে উপকূলের দিকে, অন্যটি পূর্বে ডমিনিকান রিপাবলিকের দিকে।
স্থানীয়রা বলছেন, সোমবার শহরে ঢুকে পড়া সশস্ত্র ব্যক্তিরা বিভিন্ন ভবন ও আশপাশের লোকজনকে গুলি ছোড়ে, তারা অনেক ভবন ও গাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেয়।
গ্যাং সদস্যরা স্থানীয় থানাগুলোতেও আক্রমণ করে এবং জেলে হানা দেয়; সেসময় জেলে আনুমানিক ৫০০ কয়েদি আটক ছিল, গ্যাং সদস্যরা তাদের ছেড়ে দেয়।
স্থানীয় এক রেডিও সাংবাদিক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থাকে বলেন, ভিভ আনসাম জোটের দুটি গ্যাং ফোর হানড্রেড মাওজো, ও নিজেদের ‘তালেবান’ ডাকা আরেকটি গোষ্ঠী সোমবার মিরেবালাইসে হামলা চালিয়েছিল।
এই ভিভ আনসাম জোট রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তরাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ওই এলাকা থেকে গ্রামের দিকে যাওয়ার দুটি সড়কে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় দুই গ্যাংয়ের সদস্যরা এ হামলা চালিয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
এর মধ্যে ফোর হানড্রেড মাওজো মুক্তিপণের জন্য অপহরণে কুখ্যাত। সাধারণত তারা রাজধানীতে যাতায়াত করা বাসগুলোর যাত্রীদের টার্গেট করে।
আর ‘তালেবান’ গ্যাংয়ের ঘাঁটি হচ্ছে পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর দিককার শহরতলি কানানে।
হাইতিতে দিনকয়েক আগেই গ্যাং সদস্যদের হামলায় কেনিয়ার পুলিশ কর্মকর্তা বেনেডিক্ট কাবিরু নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারকে সহায়তায় মোতায়েন করা মাল্টিন্যাশনাল সিকিউরিটি সাপোর্ট মিশন (এমএসএস)।
এই বহুজাতিক বাহিনী গ্যাংশাসিত এলাকাগুলোতে হাইতির পুলিশের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠায় চেষ্টা চালিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বলার মতো কোনো সফলতা অর্জন করতে পারেনি।
ক্যারিবীয় এই দেশটিতে গ্যাং সহিংসতায় কেবল গত বছরই ৫ হাজার ৬০০-র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জাতিসংঘের এক হিসাবে দেখা যাচ্ছে। আহত ২ হাজার ২১২ জন, অপহৃত হয়েছে প্রায় দেড় হাজার।