মেলবোর্নে ৬৫ নারীর ঠিকানায় ডাকযোগে ব্যবহৃত কনডম, তদন্ত শুরু

ওই নারীদের সবাই ১৯৯৯ সালে মেলবোর্নের কিলব্রেদা কলেজ প্রাইভেট গার্লস স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2023, 01:06 PM
Updated : 17 May 2023, 01:06 PM

অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অন্তত ৬৫ নারী ডাকযোগে ব্যবহৃত কনডম পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। যা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

ব্যবহৃত কনডম পাওয়া নারীদের সবাই দক্ষিণপূর্ব ও পূর্ব মেলবোর্নের বাসিন্দা। তাদের ঠিকানায় হাতে লেখা বা টাইপ করা বার্তাসহ কনডমগুলো পাঠানো হয়েছে।

পুলিশের ধারণা,  কোনো না কোনোভাবে ওই নারীদের মধ্যে যোগসূত্র আছে এবং তাদের লক্ষ্য করেই কেউ ঘৃণ্য এ কাজ করেছে।

বিবিসি জানায়, যেসব নারীরা অভিযোগ নিয়ে সামনে এসেছেন তাদের সবাই ১৯৯৯ সালে নগরীর কিলব্রেদা কলেজ প্রাইভেট গার্লস স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন।

বেশিরভাগ নারীই একাধিকবার চিঠি পেয়েছেন এবং সব চিঠিতেই ব্যবহৃত কনডম সংযুক্ত ছিল বলেও জানায় পুলিশ।

দেশটির গোয়েন্দা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা গ্রান্ট লুইস জানান, যে এই কাজ করছেন তাকে খুঁজে বের করতে তদন্ত কর্মকর্তারা ডিএনএ পরীক্ষা এবং হাতের লেখা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করছেন।

ওই নারীদের ঠিকানা স্কুলের একটি ‘ইয়ারবুক’ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও ধারণা প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ২৪ বছর আগে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী থাকার সময় ‘ইয়ারবুক’ এ তাদের ঠিকানা দেওয়া ছিল।

‘‘কিছু চিঠি হাতে লেখা এবং কিছু চিঠি টাইপ করা। তবে সবচিঠিতেই যৌনতা নিয়ে পরামর্শ এবং হুমকিমূলক নানা বার্তা ছিল।”

যে এই কাজ করছে তাকে হুঁশিয়ার করে এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘‘অপরাধীর প্রতি আমাদের বার্তা হলো, আপনাকে এসব বন্ধ করতে হবে এবং আমরা আপনাকে খুঁজে বের করবো।

‘‘আমরা জানি না ওই স্কুলের সঙ্গে তার কী সম্পর্ক রয়েছে। হতে পারে সাবেক শিক্ষার্থী বা একজন কর্মী...খুব সম্ভবত কেউ একজন জঞ্জালের মধ্যে ওই ইয়ারবুকটি খুঁজে পেয়েছে এবং তারা একটি খেলা খেলছে।”

বেশিরভাগ চিঠিই ওইসব নারীদের পুরানো ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে এবং তাদের বাবা-মা চিঠিগুলো খুলেছেন এবং সেগুলো দেখে আতঙ্কিত এবং পীড়িত হয়ে পড়েছেন।

চিঠি পাওয়া নারীদের একজন ব্রি। যিনি তার পুরো নাম প্রকাশ করতে চান না।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কীভাবে তার মা তাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাস করেছিলেন তিনি একটি ‘অস্বস্তিকর চিঠি’ পেয়েছেন, ওটা তার খোলা উচিত হবে কিনা।

‘‘তাকে বেশ হতাশ এবং বিচলিত মনে হয়েছিল। তিনি খুবই অপমানিত বোধ করেছিলেন এবং কেউ আমাকে টার্গেট করেছে এটা ভেবে তিনি বা বাবা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন।”

কিলব্রেদা কলেজ প্রাইভেট গার্লস স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে ব্রি ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে একটি গ্রুপ তৈরি করেন এবং জানতে চান, আর কেউ এই ধরনের চিঠি পেয়েছে কিনা।

‘‘প্রতিদিনই নতুন করে কেউ না কেউ জানাচ্ছিল তারা চিঠি পেয়েছে। এটা এখন আর কৌতুক নেই। আমরা চাই এটা বন্ধ হোক। একটি মেয়ে তো চারটি চিঠি পেয়েছে। সে আর এসব নিতে পারছে না।”

এ কাজ কার হতে পারে সে বিষয়ে ব্রি বা তার গ্রুপের কেউ কোনো ধারণা প্রকাশ করতে পারেননি। তারা কোনো যোগসূত্র খুঁজে পাচ্ছেন না।

‘‘আমাদের প্রতি ক্ষোভ থাকতে পারে এমন কারো কথা আমাদের মাথাতেই আসছে না।” যদি কেউ এই বিষয়ে কোনো তথ্য জানেন তবে তাকে সামনে আসার অনুরোধ করেছে পুলিশ।