গাজায় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সেনাদের অবিরাম লড়াইয়ের মধ্যে জ্বালানি সংকট এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতায় শুক্রবার ফের সেখানে বন্ধ হয়ে গেছে জাতিসংঘের ত্রাণ তৎপরতা। এতে আরও দুর্দশায় পড়েছে সেখানে অনাহারে থাকা বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার মানুষ।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলেছে, খাদ্য সরবরাহের অভাবের কারণে গাজার সাধারণ মানুষকে “খুব শিগগিরই অনাহারে দিন কাটাতে হতে পারে।”
হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের লড়াই প্রায় ৭ সপ্তাহে গড়িয়েছে। যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক আহ্বান কিংবা অন্ততপক্ষে ত্রাণ সরবরাহ করতে সাময়িকভাবে মানবিক বিরতির আহ্বানের পরও যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
ফিলিস্তিনের সংবাদ সংস্থা ডব্লিউএএফএ বলেছে, গাজা এবং মিশরের মধ্যকার ত্রাণ সরবরাহ পথ রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ের কাছে একদল বাস্তুচ্যুত মানুষের ওপর ইসরায়েলের হামলায় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও অনেকেই আহত হয়েছে।
আল-জাজিরা টিভি কয়েকটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, হামলায় ৯ জন মারা গেছে। আল-জাজিরা এও জানিয়েছে যে, গাজার কেন্দ্রস্থলে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ১৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
তবে এসব হামলার খবরের বিষয়ে ইসরায়েলের কাছ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি এবং বার্তা সংস্থা রয়টার্সও এসব ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী উত্তর গাজায় অভিযান চালাচ্ছে। শুক্রবার তারা সেনাদের স্থল হামলা এবং বিমান হামলা দুইই জোরদার করেছে। গতরাতের অভিযানে তারা ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীর কমান্ডারের ঘাঁটি দখল করেছে এবং একটি স্কুলের ভেতরে হামাস যোদ্ধাদের হত্যা করেছে। সেখান থেকে তারা ব্যাপক অস্ত্রও উদ্ধার করেছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ১,৪০০’র বেশি মানুষ নিহত এবং ২৪০ জন জিম্মি হওয়ার পর থেকেই সশস্ত্র এই ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার প্রত্যয় নিয়ে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ১১ হাজার ৫০০’র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ৪ হাজার ৭০০ জনই শিশু।