উদীয়মান রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডিসান্টিসকে একহাত নিলেন ট্রাম্প

মধ্যবর্তী নির্বাচনে বিপুল ভোটে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ডিসান্টিসকে রিপাবলিকান পার্টির ‘উদীয়মান তারকা’হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2022, 08:34 AM
Updated : 11 Nov 2022, 08:34 AM

সামনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারা কারা  রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হতে পারেন তা নিয়ে আলোচনার মধ্যেই একসময়ের অনুচর রন ডিসান্টিসকে একহাত নিয়ে তার সঙ্গে বিরোধ প্রকাশ্যে এনেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প।

সাবেক এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার রাতে ফ্লোরিডার গভর্নর ডিসান্টিসকে ‘আনুগত্যে’ ঘাটতি আছে’ এমন ‘গড়পড়তা মানের’ রাজনীতিক অ্যাখ্যা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ডিসান্টিস (৪৪) মঙ্গলবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে গভর্নর পদে বিপুল ভোটে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তাকে রিপাবলিকান পার্টির ‘উদীয়মান তারকা’ এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট অবশ্য তার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে একসময়ের অনুগত রিপাবলিকান গভর্নরকে সতর্কও করে দিয়েছেন।

দীর্ঘ ভাষ্যে ট্রাম্প ডিসান্টিসের সম্ভাবনাকে খারিজ করে দিয়ে ‘রাজনীতিতে তার প্রভাব নগণ্য’ বলে মন্তব্য করেন। ২০১৭ সালে প্রথমবার গভর্নর নির্বাচনের সময় ডিসান্টিস ‘মরিয়া হয়ে’ তার কাছে ছুটে এসেছিলেন বলেও দাবি করেন সাবেক এ প্রেসিডেন্ট।

“রনের জনপ্রিয়তা কম ছিল, জরিপে খারাপ করছিল, টাকা ছিল না। সে বলেছিল, আমি যদি তাকে সমর্থন দিই তাহলে সে জিততে পারে। তার প্রচারের অবস্থা ছিল ভয়াবহ, আমি সেটাও ঠিক করে দিয়েছিলাম,” বলেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প তার একসময়ের এ অনুচরকে ‘রন ডিসাঙ্কটিমোনিয়াস’ নামও দিয়েছিলেন।

২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীতার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামার সম্ভাবনা খারিজ না করে ডিসান্টিস ‘খেলছেন’ বলেও অভিযোগ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের।

রিপাবলিকান দলের প্রার্থীতার লড়াইয়ে নামলে ডিসান্টিস হারবেন বলে তাকে সতর্কও করেছেন ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিতে এসে ২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করা ট্রাম্প।

সাবেক এ প্রেসিডেন্ট শিগগিরই ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলীয় মনোনয়ন পাওয়ারও আশা করছিলেন তিনি।

তবে মধ্যবর্তী নির্বাচনে দল প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো না করায় রিপাবলিকানদের অনেকেই এখন এর দায় ট্রাম্পের ওপর চাপাচ্ছেন।

এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানরা বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে বলে বিভিন্ন জরিপে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভোটের দুইদিন পেরিয়ে যাওয়ার পর এখন মনে হচ্ছে দলটি সামান্য ব্যবধানে প্রতিনিধি পরিষদ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে; আর সেনেট কার হাতে যাবে তা এখনও অস্পষ্ট।

বিবিসি লিখেছে, ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জালিয়াতি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে সুর মেলানো বেশিরভাগ প্রার্থীই এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ধরা খেয়েছেন। ট্রাম্পের সমর্থন পাওয়া হাই-প্রোফাইল অনেক রিপাবলিকানকে হারতেও হয়েছে, কয়েকজন কোনোমতে পার পেয়েছেন।

ভোটের এমন ফলের পর অনেক ঘনিষ্ঠ মিত্রই সাবেক প্রেসিডেন্টকে তার মঙ্গলবারের ‘বড় ঘোষণা’ আপাতত তুলে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

“আমার মনে হয়, তার নির্বাচনী প্রচারে নামার ঘোষণা আপাতত স্থগিত রাখা উচিত,” ফক্স নিউজকে বলেছেন ট্রাম্পের সাবেক প্রেস সেক্রেটারি কেইলে ম্যাকএনানি।

এদিকে ফ্লোরিডায় ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী চার্লি ক্রিস্টকে প্রায় ২০ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে ডিসান্টিস রিপাবলিকান দলের মধ্যে তার জায়গা আরও পোক্ত করে নিয়েছেন।

ফ্লোরিডার অন্যতম বড় কাউন্টি এবং ডেমোক্র্যাটদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত মিয়ামি-ডেড কাউন্টিতে চার দশকে আর কোনো রিপাবলিকান প্রার্থীই তার মতো বড় ব্যবধানে জিততে পারেনি। 

২০১৬ সালে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এখানে ২৯ শতাংশ ভোট বেশি পেয়ে জিতেছিলেন। মঙ্গলবার এখানে ডিসান্টিস ৫৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।

অক্টোবরে করা ইপসসের এক জরিপে ৭২ শতাংশ নিবন্ধিত রিপাবলিকান বলেছেন, ভবিষ্যতে দলে ডিসান্টিসের বেশ ভালো বা ব্যাপক প্রভাব থাকা উচিত। ৭৬ বছর বয়সী ট্রাম্পকে নিয়ে একই কথা বলা দলের নিবন্ধিত সমর্থকের সংখ্যা ছিল ৬৪ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার ট্রাম্প যা বলেছেন ফ্লোরিডার গভর্নরের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে তার কোনো জবাব মেলেনি।