যুক্তরাজ্যের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জনাথন অ্যাশওয়ার্থ বলেছেন, তিনি চান না যুক্তরাজ্যের তৈরি অস্ত্র রাফায় ব্যবহার হোক।
Published : 12 May 2024, 07:59 PM
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় নগরী রাফায় ইসরায়েল পূর্ণ মাত্রায় অভিযান পরিচালনা করলে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে অস্ত্রের চালান স্থগিতের যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তার সঙ্গে একমত নয় যুক্তরাজ্য সরকার।
যুক্তরাজ্য সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এ বিষয়ে বিবিসিকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করার কোনো পরিকল্পনা তার সরকারের নেই।
বলেন, তিনি রাফায় স্থল অভিযান চালানোর ইসরায়েলি পরিকল্পনাকে সমর্থন করেন না। তবে যুক্তরাজ্য যদি ইসরায়েলে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করে তবে তা ‘হামাসকে শক্তিশালী করবে’।
এদিকে, দেশটির প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জনাথন অ্যাশওয়ার্থ বলেছেন, তিনি চান না যুক্তরাজ্যের তৈরি অস্ত্র রাফায় ব্যবহার হোক।
ইসরায়েল প্রতিবছর যে অস্ত্র কেনে তার মাত্র ১ শতাংশ যুক্তরাজ্য থেকে যায় বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যামেরন।
যু্ক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা আরও কয়েকটি দেশ ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছে, যদি তারা রাফায় সর্বাত্মক অভিযান শুরু করে তবে সেখানে গণহারে বেসামরিক ফিলিস্তিনিরা নিহত হবে এবং বড় ধরণের মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে।
এদিকে, সব সতর্কবার্তা এবং হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী রাফায় স্থল অভিযান পরিচালনা করবেন।
ইসরায়েলের দাবি, রাফায় হাজারের বেশি হামাস যোদ্ধা অবস্থান করেছে। তাই সেখানে পূর্ণ মাত্রায় অভিযান ছাড়া গাজায় হামাসকে নির্মূল করার তাদের লক্ষ্য পূরণ হবে না।
গত সোমবার থেকে রাফায় আকাশ হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। মিশর সীমান্তবর্তী এই নগরীতে স্থল অভিযানের প্রস্তুতিও নিচ্ছে তারা। এজন্য রাফার বাসিন্দা এবং সেখানে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১৪ লাখ ফিলিস্তিনিকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
রোববার ক্যামেরন বলেন, বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের কীভাবে সুরক্ষা দেওয়া হবে সে বিষয়ে ‘বিস্তারিত পরিকল্পনা ছাড়া’ তিনি রাফায় ইসরায়েলের পূর্ণ মাত্রার অভিযান সমর্থন করবেন না।
তবে তার যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় যুক্তরাজ্য ‘পুরোপুরি ভিন্ন অবস্থানে’ রয়েছে।
“কারণ যুক্তরাষ্ট্র বৃহৎ অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ।”
গাজায় ইসরায়েলের আকাশ হামলায় তিন ব্রিটিশ ত্রাণকর্মী নিহত হওয়ার পর ক্যামেরন নিজেই ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
সে কথা উল্লেখ করে ক্যামেরন আরও বলেন, “শেষবার আমি যখন ইসরায়েলে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে বলেছিলাম তার মাত্র কয়েকদিন পর ইরান নিষ্ঠুরভাবে ইসরায়েলে হামলা করে বসে।
“তাই আমি আজ খুব সাধারণ ভাবে ঘোষণা দিতে চাই যে, আমরা আমাদের অস্ত্র রপ্তানির কৌশল পরিবর্তন করলে সেটা হামাসকে আরও শক্তিশালী করবে এবং এটা জিম্মিদের মুক্ত করে আনার চুক্তিকে আরও কঠিন করে তুলবে।”
অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করার পরিবর্তে ক্যামেরন গাজায় প্রতিদিন যেন আরও বেশি মানবিক ত্রাণ পৌঁছায় তা নিশ্চিত করতে ‘আরও কঠোর চেষ্টা’ করে যাওয়ার দিকে অধিক মনযোগ দিতে চান।