রাশিয়ার কালো তালিকায় বারাক ওবামা

ওবামা ২০০৯ থেকে ২০১৭-র ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2023, 10:24 AM
Updated : 20 May 2023, 10:24 AM

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ যুক্তরাষ্ট্রের ৫০০ নাগরিকের রাশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশাসন।

শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা এই ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেছে; নিষেধাজ্ঞা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।

মস্কোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক নিষেধাজ্ঞার পাল্টায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ গণমাধ্যম আরটি।

“ওয়াশিংটনের জানার জন্য এটাই সর্বোৎকৃষ্ট সময় যে, রাশিয়ার ওপর প্রত্যেকটি আঘাতই পাল্টা শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখবে,” বিবৃতিতে বলেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

“আমাদের নাগরিকদের পেশাগত কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা বা যেসব বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তার পাল্টায় অনিবার্য এসব সাজা দেওয়ার নীতির প্রয়োগ অব্যাহত থাকবে,” বলেছে তারা।

ওবামা ২০০৯ থেকে ২০১৭-র ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

গত মাসে মস্কোর মার্কিন দূতাবাস রুশ সাংবাদিকদের ভিসা না দেওয়ায় তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে যাওয়া রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গী হতে পারেননি।

এর পাল্টায় রাশিয়ার সরকারও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক ইভান গেরশ্কোভিচকে কনসুলার সেবা দিতে মস্কোর মার্কিন দূতাবাসের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।

শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া কালো তালিকায় ওবামা ছাড়াও মার্কিন কংগ্রেসের অনেক সদস্য, বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নর ও অ্যাটর্নি জেনারেল, নানান থিঙ্ক ট্যাঙ্কে থাকা সাবেক কর্মকর্তা, ইউক্রেইনে অস্ত্র সরবরাহ করা সামরিক ঠিকাদাররাও স্থান পেয়েছেন।

তালিকায় এমনকী স্বল্পকাল স্থায়ী যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভুয়া তথ্যবিরোধী পরিষদের’ প্রধান নিনা জানকোভিচও স্থান পেয়েছেন।

তথাকথিত ‘ক্যাপিটলে বিদ্রোহের’ নামে ভিন্নমতাবলম্বীদের নির্যাতনে সরাসরি জড়িত সরকারি ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনেক কর্মকর্তাকেও এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রাখা হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এই শ্রেণিতে স্থান পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার অ্যাটর্নি ম্যাথিউ গ্রেভস, তার পূর্বসূরী মাইকেল শেরউইন, ওয়াশিংটন ডিসির অ্যাটর্নি জেনারেল কার্ল রেসিন এবং নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীকে গুলি করে মারা পুলিশ কর্মকর্তা মাইকেল বার্ড।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের যে কর্মকর্তারা রাশিয়ার এ তালিকায় জায়গা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে আছে জ্বালানি সম্পদ বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট জিওফ্রে প্যাট (তিনি ২০১৪ সালে ইউক্রেইনে মার্কিন রাষ্ট্রদূতও ছিলেন), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক মুখপাত্র, এখন গ্লোবাল এনগেজমেন্ট সেন্টারের প্রধান জেমস রুবিন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাউন্সেলর ডেরেক চোলেট এবং বাইডেনের ঊর্ধ্বতন উপদেষ্টা আনিতা ডুন। 

টেলিভিশন উপস্থাপক জিমি কিমেল, স্টিফেন কোবেয়ার, সেথ মেয়ারস, র‌্যাচেল মেডো, জো স্কারবারা এবং এনবিসির সাবেক উপস্থাপক ব্রায়ান উইলিয়ামসও মস্কোর এ নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন।

মার্কিন সেনা ও বিমান বাহিনীর দুই সেক্রেটারি ক্রিস্টিন ওয়ারমুথ ও ফ্রাঙ্ক কেন্ডাল এবং মার্কিন বিমান বাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল চার্লস কিউ ব্রাউন জুনিয়রের নামও শুক্রবারের তালিকায় মিলেছে।

রাশিয়ার এই তালিকার বড় অংশই দখল করে নিয়েছেন বিভিন্ন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ও সামরিক-শিল্প খাতে কাজ করা কর্মকর্তারা। 

জেনারেল ডিনামিক্সের পরিচালনা পর্ষদে থাকায় নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মেরিন জেনারেল জেমস ম্যাটিস; তার সঙ্গী হয়েছেন বিভিন্ন সংস্থার ঠিকাদার ইন-কিউ-টেলের পর্ষদে থাকা সাবেক সিআইএ পরিচালক জর্জ টেনেট।

র‌্যান্ড করপোরেশনের জ্যেষ্ঠ ফেলো ও রাশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত জন টেফটও তালিকায় আছেন; ব্রুকিংস ইনস্টিটিউটের সঙ্গে জড়িত থাকায় নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন নর্ম আইজেন ও নেলসন স্ট্রব্রিজ।

নিষেধাজ্ঞার তালিকায় কার্নেগি ফাউন্ডেশনেরও অনেকে স্থান পেয়েছেন, যাদের মধ্যে উল্লেখ করার মতো নাম হচ্ছে রাশিয়া ও ইউরেশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ গবেষক এরিক সিয়ারামেলা। আটলান্টিক কাউন্সিল ও সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অনেকেই মস্কোর নিষেধাজ্ঞায় পড়া অর্ধ সহস্রাধিক ব্যক্তির মধ্যে আছেন।

ইউক্রেইনের সাবেক অর্থমন্ত্রী নাটালি জারেস্কো ও মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একসময়কার রাশিয়া বিশেষজ্ঞ ফিওনা হিলের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে রাশিয়া।