ভারতে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর জিবিরাম জেলা সফরের আগে দিয়ে তার নিরাপত্তাকর্মীদের গাড়িবহরে এ হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত দুইজন।
Published : 10 Jun 2024, 06:45 PM
ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পর এবার মণিপুরে হামলা। আহত হয়েছেন অন্তত ২ জন নিরাপত্তাকর্মী। রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের নিরাপত্তাকর্মীদের একটি 'অ্যাডভান্সড সিকিউরিটি কনভয়'-এর ওপর এই চোরাগোপ্তা হামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার মণিপুর রাজ্যের জিরিবাম জেলা পরিদর্শনে যাওয়ার করার কথা মুখ্যমন্ত্রী বীরেন এন সিংহের। তার এই সফরের আগে 'অ্যাডভান্সড সিকিউরিটি কনভয়' জিরিবাম জেলায় যাচ্ছিল।
পথে সেই গাড়িবহর লক্ষ্য করে একাধিকবার গুলি চালায় হামলাকারীরা। এসময় পাল্টা গুলি চালান নিরাপত্তাকর্মীরাও। গুলির লড়াইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দুই নিরাপত্তাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন।
এনডিটিভির জানায়, নিরাপত্তাকর্মীদের গাড়ি ওপর গুলিবৃষ্টি হয়েছে। হামলাকারীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে নিরাপত্তাবাহিনী।
পুলিশ বলছে, গোলযোগপূর্ণ জিরিবাম জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে ৫৩ নম্বর জাতীয় সড়কে এ হামলা হয়। সড়কটির পাশে কোটলেন গ্রামের কাছে এখনও গোলাগুলি চলছে৷
জাতিগত দাঙ্গা কবলিত মণিপুর রাজ্যে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার জেরে সর্বশেষ এই অতর্কিত হামলা হল।
আপাতত পরিস্থিতি শান্ত হলেও মণিপুরের জিরিবাম জেলায় দু’দিন আগেই দুটি পুলিশ ফাঁড়ি, একটি ফরেস্ট বিট অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। মেইতেই এবং কুকি জনজাতির বাসিন্দাদের একাধিক বাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
সাম্প্রতিক এই সহিংসতা শুরু হয় ৬ই জুন। স্থানীয়রা ৫৯ বছর বয়সী মেইতেই কৃষক সইবাম শরৎকুমার সিং মৃতদেহ উদ্ধার করে। তিনি কয়েক সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ ছিলেন। ৬ জুন তার মরদেহ মেলে। এতেই গত ১ বছর ধরে মেইতেই ও কুকিদের মধ্যে চলা উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
সিংহের মৃতদেহ উদ্ধারের পর স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সামরিক বাহিনীও মোতায়েন করতে হয়েছে।
কিন্তু দ্রুত পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। ঘটনার প্রভাব প্রতিবেশী রাজ্য আসামেও ছড়িয়ে পড়ে। জাতিগত সহিংসতার জেরে প্রায় ৬০০ জন পালিয়ে কাছাড় জেলার লখিপুরে আশ্রয় নিয়েছিল আগেই।
ইম্ফল থেকে ২২০ কিলোমিটার দূরের জিরিবাম জেলা মণিপুরের জন্য কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এর একদিকে আসামের সীমানা, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়ক এর উপর দিয়ে চলে গেছে। লাগোয়া পাহাড়ে বহু কুকি জনজাতিভুক্ত মানুষের বাস। সব মিলিয়ে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ এই জায়গা।
মেইতেই, কুকি, মুসলিম, নাগা ও অ-মণিপুরী মানুষের বাসস্থান জিরিবাম জেলা। গতবছর মেইতেই ও কুকিদের মধ্যে সংঘর্ষের খুব বেশি প্রভাব পড়েনি জিরিবামে। তবে এবার বড় সহিংসতার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।