জাতিসংঘের প্রযুক্তি-যোগাযোগ সংস্থায় প্রথম নারী প্রধান

বিশ্ব এখন সংঘাত বাড়ছে, জলবায়ু সঙ্কট, খাদ্য নিরাপত্তা, লিঙ্গ বৈষম্য এবং এখনও ইন্টারনেট সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন আছেন ২৭০ কোটি মানুষ।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2022, 07:23 AM
Updated : 30 Sept 2022, 07:23 AM

‘ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ)’-এর প্রথম নারী মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ডোরিন বোগডান-মার্টিন। যোগাযোগ প্রযুক্তির আন্তর্জাতিক বাজারে মান নির্ধারক হিসেবে জাতিসংঘের প্রতিনিধিত্ব করে সংস্থাটি।

জাতিসংঘের অভ্যন্তরীণ কাঠামোর অন্তর্ভূক্ত সবচেয়ে পুরনো সংস্থাগুলোর একটি আইটিইউ। ১৮৬৫ সালে প্রতিষ্ঠার সময় সংস্থাটি আন্তর্জাতিক টেলিগ্রাফ নেটওয়ার্কের দেখভাল করতো। বর্তমানে রেডিও, স্যাটেলাইট এবং ইন্টারনেট যোগাযোগ প্রযুক্তিতে আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে টেলিযোগাযোগ কাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে সংস্থাটি।

বিবিসি জানিয়েছে, সংস্থাটির মহাসচিব পদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বোগডান-মার্টিনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন রাশিয়ার রাশিদ ইসমাইলভ। নির্বাচনে ইসমাইলভ ২৫ ভোট পেলেও ১৩৯ ভোট পেয়ে জিতেছেন বোগডান-মার্টিন।

আইটিইউয়ের মহাসচিব পদে হুওলিন জা’র স্থলাভিষিক্ত হবেন বোগডান-মার্টিন; আনুষ্ঠানিকভাবে তার মেয়াদ শুরু হবে ২০২৩ সালের প্রথম দিন থেকে। ২০১৪ সাল থেকে দুই দফায় মহসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন জা।

আইটিইউ মহাসচিব হিসেবে বোগডান-মার্টিনের ওপর বেশ কিছু গুরুদায়িত্ব বর্তাবে, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ খাতে যার প্রভাব হবে বহুমাত্রিক। এর মধ্যে আছে পৃথিবীকে ঘিরে চক্কর দিতে থাকা স্যাটেলাইটগুলোর মধ্যে সমন্বয়, টেলিযোগাযোগ খাতের কারিগরি মান সমন্বয় করা এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন।

আইটিইউয়ের মহাসচিব পদে নির্বাচনকে ঘিরে উদ্বেগ বিরাজ করছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি। নির্বাচনের আগেই ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিধিনিষেধ আরোপের ডাক দিয়েছিলেন বোগডান-মার্টিনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ইসমাইলভ।

অন্যদিকে মহাসচিব পদে নির্বাচিত হওয়ার পর দেওয়া বক্তব্যে পুরো বিশ্বে ইন্টারনেট সংযোগের আওতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন বোগডান-মার্টিন।

“আমাদের নিজেদের সন্তান হোক বা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হোক, তাদের বেড়ে ওঠার জন্য নির্ভরযোগ্য এবং স্থিতিশীল অবকাঠামো দিতে হবে আমাদের। বিশ্ব এখন অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে - সংঘাত বাড়ছে, জলবায়ু সঙ্কট, খাদ্য নিরাপত্তা, লিঙ্গ বৈষম্য এবং এখনও ইন্টারনেট সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন আছেন ২৭০ কোটি মানুষ,” বলেন তিনি।

এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার ক্ষেত্রে আইটিউয়ের ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

কে এই ডোরিন বোগডান-মার্টিন?

নতুন মহাসচিব নির্বাচিত হওয়ার আগে আইটিইউয়ের ‘টেলিকমিউনিকেশন ডেভেলপমেন্ট বুরো’র পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বোগডান-মার্টিন। পরিচালক পদে কর্মরত অবস্থায় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ডিজিটাল দক্ষতা উন্নয়ন এবং লিঙ্গ বৈষম্য নিরসনের লক্ষ্যে কাজ করেছেন তিনি।

বিবিসি জানিয়েছে, আইটিইউয়ের মহাসচিব পদে বোগডান-মার্টিনের প্রার্থীতায় সমর্থন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। প্রার্থী হিসেবে বোগডান-মার্টিনের ‘ডিজিটাল দুনিয়ার দৃশ্যপট পাল্টে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সততা, অভিজ্ঞতা এবং দূরদৃষ্টি’ আছে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

“প্রতিটি স্কুলে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভার্চুয়ালি শেখার সুযোগ দেওয়া, নারী ও শিশুদের সফলতার জন্য প্রয়োজনীয় ডিজিটাল টুল দেওয়া এবং অনলাইনে স্বাস্থ্যবিষয়ক এবং শিক্ষামূলক সম্পদের পরিধি বাড়ানোর গুরুত্ব বোঝেন তিনি,” - এক বিবৃতিতে বলেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।