হাজার কোটি ডলারের আইপিও নিয়ে মার্কিন পুঁজিবাজারে যাচ্ছে আর্ম

ইংল্যান্ডের কেমব্রিজে ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানিটিকে যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তি সেক্টরের ‘ক্রাউন জুয়েল’ বা মুকুটের শীর্ষ রত্ন বলে বিবেচনা করা হয়।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2023, 12:17 PM
Updated : 2 May 2023, 12:17 PM

মার্কিন পুঁজিবাজারে ২০১২ সালের সবচয়ে বড় ঘটনা ছিল ফেইসবুকের আইপিও ঘোষণা বা শেয়ার বাজারে প্রবেশ। এর দুই বছর পরই চীনের আলিবাবাও নাম লেখায় সেখানে। একই গুরুত্বের একটি বড় ঘটনা সম্ভবত ঘটতে যাচ্ছে এ বছরও। ব্রিটিশ চিপ নকশা প্রতিষ্ঠান আর্ম নাম লেখাচ্ছে নিউ ইয়র্কের নাসডাকে। 

একাধিক সূত্র থেকে আসা অনুমান বলছে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজভিত্তিক এই কোম্পানিটি সম্ভবত প্রথম দানেই বাজার থেকে তুলে নেবে হাজার কোটি ডলার।

গত মার্চেই কোম্পানিটি জানিয়েছিল, যুক্তরাজ্যের পুঁজিবাজারে শেয়ার ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।

এর আগে ২০১৬ সালে তিন হাজার একশ ৪০ কোটি ডলারে আর্মকে কিনে নেয় জাপানি শিল্পগোষ্ঠী সফটব্যাংক। সে সময়ই যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজার থেকে নিজেদের তুলে নেয় মাইক্রোচিপ প্রযুক্তি নকশায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এই কোম্পানি।

মোবাইল ফোন, গেইমিং কনসোলসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রে ব্যবহৃত হয় আর্ম-এর নকশা করা মাইক্রোচিপ।

তাদের নকশা থেকে বাণিজ্যিকভাবে চিপ উৎপাদন করে তাইওয়ান সেমিকন্ডাকটর কোম্পানির পাশাপাশি স্যামসাং ও অ্যাপলের মত ব্র্যান্ডও।

আর্মের যুক্তরাষ্ট্রের পূঁজিবাজারে তালিকাভূক্তির হলফনামার খসড়া গোপনে মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে জমা দেওয়ার কথা বলেছে এর মালিক প্রতিষ্ঠান সফটব্যাংক।

তবে, নাসডাকে শেয়ারের প্রস্তাবিত আকার বা বাজারে আসার সম্ভাব্য তারিখের ব্যাপারে কিছু না বললেও নিউ ইয়র্কের প্রযুক্তিনির্ভর এই পূঁজিবাজার থেকে আটশ থেকে হাজার কোটি ডলার তোলার আশা করছে কোম্পানিটি।

এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আর্ম একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হবে যার শেয়ার উন্মুক্ত থাকবে ক্রয়বিক্রয়ের জন্য।

ইংল্যান্ডের কেমব্রিজে ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানিটিকে যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তি সেক্টরের ‘ক্রাউন জুয়েল’ বা মুকুটের শীর্ষ রত্ন বলে বিবেচনা করা হয়।

লন্ডন স্টকএকচেঞ্জে ফিরে আসার আপাতত কোন পরিকল্পনা না থাকলেও সেখানে কোম্পানিটিকে ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

আর্মের এই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তিভিত্তিক পূঁজিবাজারের জন্য দুঃসংবাদ বলেই বিবেচনা করা হচ্ছে, অপরদিকে মার্কিন পূঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা একে দেখবেন লাভজনক ও নিরাপদ হিসাবে।

পূঁজিবাজারে আর্মের নতুন করে কয়েক বিলিয়ন ডলারের এই যাত্রাকে বিশ্ব অর্থনীতির সংকটের মধ্যেও কোম্পানিটির অগ্রগতিকেই নির্দেশ করছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।

রাশিয়া ও ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই পশ্চিমের শেয়ারবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানির সংখ্যা কমতে থাকে। তারও আগে, কোভিড মহামারীর পরপর শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর শেয়ার মূল্যে ব্যাপক পতন ঘটে।

সফটব্যাংক বলছে পুঁজিবাজারে তাদের তালিকাভূক্তি নির্ভর করছে “বাজারের পরিস্থিতি, অন্যান্য পারিপাশ্বিক অবস্থা এবং সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের পর্যবেক্ষণের উপর।”