ডিপফেইক চিরতরে বন্ধ করা সম্ভব: ইনটেল

সাধারণ ব্যবহারকারীদের হাতে নাগালে চলে আসার পর ডিপফেইকের অপব্যবহার, বিশেষ করে রাজনৈতিক মিথ্যাচার ও বিদ্বেষমূলক অপপ্রচারে ব্যবহৃত হচ্ছে এ প্রযুক্তি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Nov 2022, 11:12 AM
Updated : 18 Nov 2022, 11:12 AM

‘ডিপফেইক ভিডিও’ চিহ্নিত করতে নতুন ‘ফেইকক্যাচার’ সফটওয়্যার বানিয়েছে ইনটেল। প্রথমসারির এ টেক জায়ান্টের দাবি, এআই ব্যবহার করে তৈরি ভুয়া ভিডিও চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে তাদের সফটওয়্যারের সাফল্য ৯৬ শতাংশ।

নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ‘ফেইকক্যাচার’ উন্মোচন করেছে ইনটেল। বাজারের বিদ্যমান ডিপফেইক চিহ্নিতকরণ প্রযুক্তির সঙ্গে এর মূল পার্থক্য একটি – মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি নির্ভর এ সফটওয়্যার। 

অন্যান্য ডিপফেইক চিহ্নিতকরণ প্রযুক্তি যেখানে ভিডিওতে অসামঞ্জস্যতা খোঁজে, সেখানে ভিডিওর কনটেন্ট বিশ্লেষণ করে ফেইকক্যাচার সিদ্ধান্ত নেয়, পর্দার ব্যক্তি আদৌ কোনো রক্তমাংসের মানুষ না কি কোনো কৃত্রিম দৃশ্যায়ন। 

এ ক্ষেত্রে সফটওয়্যারটি এ সিদ্ধান্ত কী ভাবে নেয় – সে প্রশ্নের এক চমকপ্রদ উত্তর দিয়েছেন ইনটেল ল্যাবসের জ্যেষ্ঠ গবেষক ইলকা ডেমির; পর্দার মুখ দেখেই ফেইকক্যাচার সফটওয়্যার জেনে যায় যে ওই ব্যক্তির আদৌ কোনো হৃদস্পন্দন আছে কি না।

“হৃদপিণ্ড যখন রক্ত সঞ্চালন করে, তখন রং পাল্টায় আমাদের শিরাগুলো। মুখের বিভিন্ন জায়গা থেকে এই রক্ত সঞ্চালনের তথ্য সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করে অ্যালগোরিদম। এরপর ডিপ লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে ভিডিওটি আদৌ আসল না কি ভুয়া,” নিজস্ব প্রতিবেদনে লিখেছে ইনটেল।

এ প্রক্রিয়া ফটোপ্লেথিসমোগ্রাফি (পিপিজি) নামেও পরিচিতি বলে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট টেকরেডার। 

প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ভেঞ্চারবিটকে ডেমির জানিয়েছেন, ভিডিওতে মুখের ত্বকের বিভিন্ন অংশে রঙের পরিবর্তনগুলো মানুষের চোখে ধরা না পড়লেও কম্পিউটারের চোখ এড়াতে পটারে না। “পিপিজি সিগনালের বিষয়টি আগে জানা থাকলেও, ডিপফেইক জটিলতার সমাধানে আগে কখনো প্রয়োগ করা হয়নি।”

ফেইকক্যাচার মুখের ৩২টি জায়গা থেকে পিপিজি সিগনাল সংগ্রহ করে বলে জানিয়েছেন ডেমির। 

ডেমির ফেইকক্যাচার বানাতে বিংহ্যামটনের স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্কের গবেষক উমুর সিফচির সঙ্গে কাজ করেছেন কলে জানিয়েছে টেকরেডার।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া ভিডিও নির্মাণের চল বেড়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ সাধারণ ব্যবহারকারীদের হাতে নাগালে চলে আসার পর এ অপব্যবহারও বেড়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে রাজনৈতিক মিথ্যাচার ও বিদ্বেষমূলক অপপ্রচারে ব্যবহৃত হচ্ছে এ প্রযুক্তি। 

এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে তৎপরতা হয়েছে ইনটেলসহ আরও বেশি কিছু প্রতিষ্ঠান।