“ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার শুরু করার পরপরই আমার মেয়ে অনাকাঙ্খিত যৌন হয়রানির শিকার হতে শুরু করে। নারীবিদ্বেষ, হয়রানির মতো বিষয় মাত্র ১৪ বছর বয়সে!”
Published : 08 Nov 2023, 06:15 PM
টিনএজারদের ওপর যৌন হয়রানী ঠেকাতে যথেষ্ট সুরক্ষা ব্যবস্থা নিচ্ছে না মেটা – এমন কথা বলেছেন কোম্পানির সাবেক এক কর্মকর্তা। পাশাপাশি এমন তথ্য প্রকাশ করার কারণে এই সেক্টরেই তার আর কাজ করা সম্ভব হবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
আর্টুরো বেজার ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে মেটাতে কাজ করেছেন। এরপর আবার ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্তও ছিলেন একই কোম্পানিতে।
এরইমধ্যে কোম্পানির অভ্যন্তরীন বিষয় তিনি ‘জনস্বার্থে’ প্রকাশ্যে এনেছেন, কর্পোরেট দুনিয়ায় যাকে বলা হয় ‘হুইসলব্লোয়িং’।
মার্কিন কংগ্রেসের সামনে মঙ্গলবার তিনি বলেন, “হুইসলব্লো’র মানে হচ্ছে, আমার সম্ভবত এই সেক্টরে আর কাজ করা হবে না।”
ইনস্টাগ্রাম ও ফেইসবুকের মূল কম্পানি মেটা অবশ্য ভিন্ন কথা বলছে। সামাজিক মাধ্যম জায়ান্ট কোম্পানিটির দাবি টিনএজারদের অনলাইনে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তারা ৩০ টিরও বেশি দরকারি টুল এনেছে।
অনলাইনে ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা দেওয়া ছিল আর্টুরো বেজারের কাজেরই অংশ। ২০১৫ সালে মেটা ছেড়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি নিজে সন্তুষ্ট ছিলেন যে সুরক্ষার কাজটি ঠিকঠাকই চলছে। সেই ভুল তার ভাঙে যখন নিজের মেয়ের ইনস্টাগ্রাম অভিজ্ঞতা তার চোখে পড়ে। মনে হয়- এখানে “ঝামেলা আছে”।
বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বেজার বলেন, “ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার শুরু করার পরপরই আমার মেয়ে অনাকাঙ্খিত যৌন হয়রানির শিকার হতে শুরু করে।”
“নারীবিদ্বেষ, হয়রানির মতো বিষয়, মাত্র ১৪ বছর বয়সে!”
বেজার বলেন, “মেয়ের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে টের পেলাম, কেবল সে নয়, তার প্রায় সব বান্ধবীর অভিজ্ঞতাও একই।”
“হতভম্ব হয়ে আমি আবিষ্কার করলাম এক্ষেত্রে তার হাত-পা বাঁধা। কারণ এসব বিষয় নিয়ে রিপোর্ট করা বা অভিযোগ দেওয়ার কোনও উপায় নেই।”
সিনেটরদের বেজার বলেন, মেটা প্রধান মার্ক জাকারবার্গসহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে তার নিয়মিত সাক্ষাত হতো এবং তারা তাকে সে সময় কাজের ব্যাপারে সহায়তা করেছেন।
তবে, ওই সহযোগিতা পর্যন্তই! বক্তব্যের উপসংহারে তিনি বলেন, শীর্ষ কর্মকর্তারা “কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে কেবল কালক্ষেপণই করে গেছেন”।
২০২১ সালে একটি ইমেইলে বেজার জাকারবার্গসহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ নথির দেখিয়ে বলেন এর আগের সাতদিনে নেতিবাচক এবং ক্ষতিকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন অর্ধেকেরও বেশি ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকরী। তাদের প্রতি চার জনের মধ্যে একজন ছিল ১৩ থেকে ১৫ বছরের শিশু যারা অনাকাঙ্খিত যৌন আচরণের শিকার হয়েছেন। এর মানে হচ্ছে, মোট ব্যবহাকারীদের প্রতি আট জনে একজন শিশু এমন নিপীড়নের শিকার।
“তারা সবই জানত তারপরেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।”
অনলাইনে শিশু নিরাপত্তা আইন নিয়ে প্রচারণা চালানো দুজন সিনেটরের সামনে গত সপ্তাহে জবানবন্দী দেওয়ার সময় জানান মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোতে অল্পবয়সী ব্যবহারকারীদের ক্ষতির ব্যাপারগুলো উপেক্ষা করেছেন কোম্পানিটির শীর্ষ কর্মকর্তারা।