এতে স্পন্দনশীল হৃদপিণ্ড বা মস্তিষ্ক গঠনে ব্যবহৃত কোষ না থাকলেও প্ল্যাসেন্টাসহ অন্যান্য অঙ্গ ও ভ্রণের নিজের গঠন তৈরিতে ব্যবহৃত কোষ আছে।
Published : 15 Jun 2023, 06:02 PM
‘স্টেম সেল’ ব্যবহার করে কৃত্রিম মানব ভ্রূণ তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। আর একে দেখা হচ্ছে ‘বড় এক অগ্রগতি’ হিসেবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উদ্ভাবন গর্ভপাতের কারণ ও মানব বিকাশের বিভিন্ন বিষয়াদি নতুন করে বুঝতে সহায়তা করবে। তবে, আইনি ও নীতিগত বিভিন্ন প্রশ্নও জন্ম নিচ্ছে এটি।
বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন শহরে অলাভজনক সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর স্টেম সেল রিসার্চ’ আয়োজিত বার্ষিক সভায় এই কৃত্রিম ভ্রূণকে ১৪ দিন পর্যন্ত বিকশিত প্রাকৃতিক ভ্রূণের পর্যায়ে নেওয়ার বর্ণনা দেন ‘কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি’ ও ‘ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি’র অধ্যাপক ম্যাগডালেনা জারনিকা-গোয়েটজ।
ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘দ্য গার্ডিয়ান’ বলছে, এই কাঠামোর জন্য ডিম্বাণু বা শুক্রাণুর প্রয়োজন পড়ে না। আর এতে স্পন্দনশীল হৃদপিণ্ড বা মস্তিষ্ক গঠনে ব্যবহৃত কোষ না থাকলেও প্ল্যাসেন্টাসহ অন্যান্য অঙ্গ ও ভ্রণের নিজের গঠন তৈরিতে ব্যবহৃত কোষ আছে।
এই কৃত্রিম মডেল পরবর্তীতে মানব গর্ভে স্থাপন করে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে কি না, তা এখনও অজানা।
এর বিস্তারিত এখনও জার্নাল পেপার আকারে প্রকাশিত হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে গার্ডিয়ান।
লন্ডনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউট’-এর সহকারী গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক জেমস ব্রিসকো বলেন, পিয়ার রিভিউ করা গবেষণাপত্র ছাড়া এর বৈজ্ঞানিক তাৎপর্য সম্পর্কে বিশদভাবে মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তবে, এই অগ্রগতির ‘ব্যাপক সম্ভাবনা আছে’।
“এগুলো মানব ভ্রূণ বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলো সম্পর্কে মৌলিক তথ্য দিতে পারে।” --বলেন তিনি।
“এইসব ধাপগুলো নিয়ে গবেষণা করা খুবই কঠিন। আর এখন এমন এক সময় যাচ্ছে যখন গর্ভপাতের সংখ্যা বেড়েছে অনেক।”
“এতে নতুন দৃষ্টিপাতের মাধ্যমে গর্ভপাতের কারণ ও মানব ভ্রূণ বিকাশের স্বতন্ত্র দিকগুলো নিয়ে আরও বিষদভাবে জানার সম্ভাবনা আছে।”
তবে ব্রিসকো আরও বলেন, এটি নীতিগত ও আইনি বিষয়াদি নিয়ে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ প্রশ্ন তুলবে।
“প্রচলিত ভিট্রো ফার্টিজাইজেশন ব্যবস্থা থেকে তৈরি মানব ভ্রূণের বেলায় যেমন আইনি কাঠামো রয়েছে, স্টেম সেল থেকে পাওয়া মডেল নিয়ে তেমন কোনো স্পষ্ট কাঠামো নেই।”
“স্টেম সেল উৎপাদন এবং সেখান থেকে মানব ভ্রূণ তৈরির বিষয়ে একটি নীতিমালা জরুরীভিত্তিতে দরকার।”
তিনি আরও বলেন, এই গবেষণায় গবেষকরা যেন ‘যত্নসহকারে, সাবধানে ও স্বচ্ছভাবে’ কাজ করেন সেটিও গুরুত্বপূর্ণ।
“এর বিপদ হল, যে কোনো ধরনের ভুল পদক্ষেপ বা ভ্রান্ত দাবি সাধারণ মানুষ ও নীতিনির্ধারকদের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।” --বলেন তিনি।
“আর তেমনটা হলে এই খাতকে অনেক পিছিয়ে দেবে এটি।”