শেয়ার মালিক হিসেবে নিজের ভোট দেওয়ার ক্ষমতার একাংশ অ্যান্ট গ্রুপের প্রধান নির্বাহী এরিক জিংসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করতে পারেন জ্যাক মা।
Published : 29 Jul 2022, 06:17 PM
চীনের প্রযুক্তি জায়ান্ট ‘অ্যান্ট গ্রুপ’-এর নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে যাচ্ছেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা জ্যাক মা।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ‘আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং লিমিটেড’এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান অ্যান্ট গ্রুপের ১০ শতাংশ শেয়ারের মালিক জ্যাক মা। এ ছাড়াও, নিজের মালিকানায় থাকা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি অ্যান্ট গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করেন । এখন তিনি অ্যান্ট গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে চান।
জ্যাক মা’র মালিকানাধীন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ‘হাংঝোউ ইউনবু’র অধীনে আরও দুটি কোম্পানি রয়েছে, যৌথভাবে যাদের অধীনে অ্যান্ট গ্রুপের ৫০.৫ শতাংশ শেয়ার আছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
২০২০ সালে বিশ্বের বৃহত্তম আইপিও নিয়ে শেয়ার বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করেও চীনের বাজার নিয়ন্ত্রকদের চাপে সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল কোম্পানিটি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল লিখেছে, শেয়ার মালিক হিসেবে নিজের ভোট দেওয়ার ক্ষমতার একাংশ অ্যান্ট গ্রুপের প্রধান নির্বাহী এরিক জিংসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করতে পারেন মা। ইতোমধ্যে স্থানীয় বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জ্যাক মা’র পরিকল্পনা সম্পর্কে জানিয়েছে অ্যান্ট গ্রুপ।
এদিকে রয়টার্স জানিয়েছে, ব্যবসায়িক কাঠামো ঢেলে সাজিয়ে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশের পরিকল্পনা করেছে অ্যান্ট গ্রুপ। এই পরিবর্তন চীনের নিয়ন্ত্রক সংস্থার চাপের মুখে না হলেও, এতে সমর্থন আছে তাদের।
এ বিষয়ে অ্যান্ট গ্রুপ এবং আলিবাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর পায়নি রয়টার্স।
২০২০ থেকেই চীনের নিয়ন্ত্রক সংস্থার চাপের মুখে আছেন জ্যাক মা। সে বছরের অক্টোবর মাসে জনসম্মুখে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর সমালোচনা করেছিলেন তিনি। ওই সময়ে বিশ্বের বৃহত্তম আইপিও নিয়ে শেয়ারবাজারে অভিষেকের পথে ছিল অ্যান্ট গ্রুপ।
কিন্তু জ্যাক মার সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে চীনের স্থানীয় বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার রোষে পড়ে অ্যান্ট গ্রুপ। বাতিল হয়ে যায় আইপিও, দীর্ঘ দিন লোকচুক্ষুর বাইরে ছিলেন জ্যাক মা নিজে।
ওই ঘটনার পর থেকেই অ্যান্ট গ্রুপের ব্যবসা কাঠামো ঢেলে সাজানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বিশ্বের বৃহত্তম এবং চীনের সর্বব্যাপী লেনদেনের অ্যাপ ‘আলিপে’ পরিচালনা করে অ্যান্ট গ্রুপ। অ্যাপটির ব্যবহারকারীর সংখ্যা একশ কোটিরও বেশি।
লম্বা সময় ধরে দেশের প্রযুক্তি খাতের প্রতি নমনীয় ছিল চীনের বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা, এর ফলে দেশটিতে এই শিল্প এত দ্রুত বেড়ে ওঠার সুযোগ পেয়েছে বলে উঠে এসেছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।
কিন্তু, ২০২০-এর পর পাল্টে গেছে সেই দৃশ্যপট। গেল বছরে দেশের প্রযুক্তি শিল্পের প্রথমসারির প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে চীন।
এ সপ্তাহের শুরুতে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আলিবাবা। ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, অ্যান্ট গ্রুপের নির্বাহীরা আর ‘আলিবাবা পার্টনারশিপ’-এ নেই। ই-কমার্স জায়ান্টের পরিচালনা পর্ষদের সিংহভাগ পরিচালককে বাছাই করে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল ‘আলিবাবা পার্টনারশিপ’-এর।
রয়টার্স বলছে, নিয়ন্ত্রকদের খুশি করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যান্ট গ্রুপ।
অ্যান্ট ও আলিবাবা এখন নিজেদের ব্যবসাগুলো আলাদা করে ফেলছে বলে উঠে এসেছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে। স্বাধীনভাবে নতুন ব্যবসা প্রকল্পের খোঁজ করছে উভয় প্রতিষ্ঠান।