যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ানে পৌঁছানোর আগেই ডিডিওএস হামলার শিকার হয়েছে দেশটির একাধিক সরকারি ওয়েবসাইট। সাইবার নিরাপত্তা গবেষকরা বলছেন, হামলার পেছনে চীনা কর্তৃপক্ষ নয়, বরং যুক্ত ছিল ‘চীন সমর্থক’ হ্যাকাররা।
চীনের কাছ থেকে বার বার কড়া হুমকির মুখে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় তাইওয়ানে পৌঁছেছেন পেলোসি। তাইওয়ানে গেলে ‘মারাত্মক পরিণতি’ ভোগ করতে হবে বলে আগেই শাসিয়েছিল চীন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পেলোসি তাইওয়ানে পৌঁছানোর আগেই ‘ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল অফ সার্ভিস (ডিডিওএস)’ হামলার শিকার হয়েছে দেশটির প্রেসিডেনশিয়াল অফিসের ওয়েবসাইট। মঙ্গলবারের ওই সাইবার হামলায় ওয়েবসাইটটি প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছেন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
হামলার ২০ মিনিটের মধ্যেই ওয়েবসাইটটি পুনরায় চালু করার কথা উল্লেখ রয়েছে বিবৃতিতে। ‘তথ্যযুদ্ধের মুখে’ তাইওয়ানের সাইবার নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সার্বিক পরিস্থিতির ওপর কাছ থেকে নজর রাখছেন বলে রয়টার্সকে বলেছেন তাইওয়ান সরকারের এক মুখপাত্র।
মঙ্গলবারে সাইবার হামলার শিকার হয়ে তাইওয়ান সরকারের একটি পোর্টাল এবং দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটও কিছু সময় বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সাইবার হামলা প্রসঙ্গে তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এক মিনিটে ৮৫ লাখ ডেটা অনুরোধের শিকার হয়েছিল উভয় ওয়েবসাইট। এর সিংহভাগ এসেছে চীন, রাশিয়া এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে।
ডিডিওএস হামলায় টার্গেট সার্ভারে হ্যাকাররা এক সঙ্গে এতো বিপুল পরিমাণ ডেটা অনুরোধ পাঠায় যে, বাড়তি অনুরোধের চাপ সামলাতে না পেরে কাজ থামিয়ে দেয় সার্ভার, অফলাইনে চলে যায় ওয়েবসাইট।
পেলোসির তাইওয়ান সফরের সমসাময়িক সাইবার হামলাগুলো নিয়ে স্যান্স টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের ডিন অফ রিসার্চ ইওহানেস উলরিচ বলেছেন, “এই হামলাগুলো ছিল অসমন্বিত, এলোমেলো এবং নৈতিকতাবিহীন। চীনের হ্যাকটিভিস্টরা তাদের বার্তা পৌঁছে দিতে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে এমন হামলা চালায়।”
“সাধারণত হামলাগুলো কয়েক দিন ধরে চলে। কিন্তু, প্রায়শই এক সপ্তাহের মধ্যে ইন্টারনেট সংযোগ হারায় হামলাকারীরা। বেশিরভাগ হামলাই উদ্বুদ্ধ হয়েছে চীনের গণমাধ্যমের লেখালেখি থেকে,”-- যোগ করেন তিনি।
চীনের বাণিজ্যিক ইন্টারনেট ব্যবস্থায় নিবন্ধিত ডিভাইসের সঙ্গে জড়িত কয়েক লাখ আইপি অ্যাড্রেস থেকে হামলা চালানোর কথা জানিয়েছেন উলরিচ।
তবে, এই ঘটনার সঙ্গে চীনের রাষ্ট্রীয় হ্যাকারদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাননি সাইবার নিরাপত্তা গবেষকরা। ফলে হামলার পেছনে চীন সরকারের প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল না বলেই ধারণা করছেন তারা।