যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রীত অর্ধেকের বেশি ড্রোন চীনা কোম্পানি ডিজেআইয়ের তৈরি এবং সেগুলো বিভিন্ন সরকারি সংস্থার পছন্দ তালিকার শীর্ষে রয়েছে।
Published : 01 Aug 2023, 05:21 PM
ড্রোন এবং ড্রোনের যন্ত্রাংশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলো চীন। এই পদক্ষেপ চলমান চীন-মার্কিন বিরোধে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
"জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বার্থকে" সুরক্ষিত রাখার কথা বলে জারি করা এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে কিছু ড্রোন ইঞ্জিন, লেজার, যোগাযোগ যন্ত্রাংশ এবং ড্রোন বিধ্বংসী প্রযুক্তি যা পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে, বলেছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এই অবরোধের মধ্যে রয়েছ কিছু বাণিজ্যিক ড্রোন এবং অসমারিক ড্রোন সামরিক কাজে ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা। — বিবৃতিতে বলেছে মন্ত্রণালয়।
“এই সময়ে ড্রোন নিয়ন্ত্রণের মত সংযত সিদ্ধান্ত বিশ্ব নিরাপত্তা ও শান্তি রক্ষায় বড় দেশ হিসাবে চীনের দায়িত্বশীল আচরণই প্রকাশ করে।” বলেছেন নাম প্রকাশ না পাওয়া মুখপাত্রটি।
চীনা কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট দেশ এবং অঞ্চলকে এ বিষয়ে জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বিশ্বে ড্রোনের বড় উৎপাদক দেশ চীন এবং এইসব ড্রোন রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে।
রয়টার্সের পক্ষ থেকে মার্কিন প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এর আগে চীন থেকে ড্রোন কেনা বা ব্যবহার বিষয়ে ২০১৯ সালে পেন্টাগনকে নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন কংগ্রেস।
তখন মার্কিন আইনপ্রণেতারা সতর্ক করে বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রীত অর্ধেকের বেশি ড্রোন চীনা কোম্পানি ডিজেআইয়ের তৈরি এবং সেগুলো বিভিন্ন সরকারি সংস্থার পছন্দ তালিকার শীর্ষে রয়েছে।
মঙ্গলবার ডিজেআই বলেছে, যেসব দেশে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করে সেখানে তারা প্রচলিত আইন এবং নীতিমালা কঠোরভাবে মেনে চলে। এর মধ্যে চীনের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ কতৃপক্ষের বিধিনিষেধও রয়েছে।
“আমরা কখনোই সামরিক ব্যবহারের জন্য আমাদের কোনো পণ্য তৈরি করিনি। সেইসঙ্গে কোনো সামরিক সংঘাত কিংবা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী কোনো দেশের কাছে আমাদের কোনো পণ্য বিক্রি কিংবা বিপণনও করা হয়নি।” বলেছে ড্রোন নির্মাতা কোম্পানিটি।
কোম্পানিটি রাশিয়ার কাছে ইউক্রেইনের সৈন্যদের অবস্থান ফাঁস করেছে –২০২২ সালের মার্চে এমন অভিযোগ করেন একজন জার্মান খুচরা বিক্রেতা। একে “ডাহা মিথ্যা” বলে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ডিজেআই।
চীনা কোম্পানিটি ইউক্রেইন যুদ্ধে নজরদারি চালিয়েছে এমন “ভিত্তিহীন অভিযোগ” করে কোম্পানিটির ওপর “কালিমা লেপনের” চেষ্টা করেছে মার্কিন এবং পশ্চিমা গণমাধ্যম। যার ফলস্বরুপ দেশটি ড্রোন রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আনতে পারে, গত এপ্রিলে এমন বক্তব্য দেয় চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
চীনে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া চিপ নিষেধাজ্ঞার পরে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রে চীনের গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়াম রপ্তানীর নিষেধাজ্ঞা। সেই ধারাবাহিকতার সঙ্গে এবার যুক্ত হলো ড্রোন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা।