“আমাদের অর্থায়নের ব্যবস্থা করে ব্রিটিশ জনগণ, লাইসেন্সিং ফি’র মাধ্যমে।” -- বিবিসি। “সকল প্রতিষ্ঠানেই পক্ষপাতমূলক আচরণ বিদ্যমান।” - ইলন মাস্ক
Published : 11 Apr 2023, 04:43 PM
নিজেদের মূল টুইটার অ্যাকাউন্টে ‘সরকারি তহবিলের গণমাধ্যম’ লেবেল নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বিবিসি।
২২ লাখের বেশি ফলোয়ার থাকা ‘@BBC’ নামের টুইটার অ্যাকাউন্ট নতুন লেবেল যুক্ত করার বিষয়টি উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির নিজের প্রতিবেদনেই। তবে বিবিসি’র নিউজ ও স্পোর্টস বিভাগ সম্পৃক্ত অ্যাকাউন্টে এখনও এই লেবেল যুক্ত হয়নি।
দীর্ঘদিন ধরে চলা গণমাধ্যমটি লেবেল সংশ্লিষ্ট সমস্যাটি ‘যতো দ্রুত সম্ভব’ সমাধানের জন্য টু্ইটারের সঙ্গে কথা বলছে বলে জানিয়েছে।
“বিবিসি সবসময় স্বতন্ত্র ছিল ও এখনও আছে। আমাদের অর্থায়নের ব্যবস্থা করে ব্রিটিশ জনগণ, যা আসে লাইসেন্সিং ফি’র মাধ্যমে।” --বিবৃতিতে বলেছে বিবিসি।
এই সম্প্রচারকের এক ইমেইল বার্তার জবাবে টুইটার সিইও ইলন মাস্ক জিজ্ঞেস করেন, “এই টুইটার লেবেল কী সঠিক?”
আলাদা এক মেইল বার্তায় এই গণমাধ্যমটি নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে বললে মাস্ক বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও নির্ভুলতায় পৌঁছানোর লক্ষ্যস্থির করেছি। আমি মনে করি বিভিন্ন গণমাধ্যমভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের আত্মসচেতন হওয়া উচিৎ। আর তাদের মধ্যে পক্ষপাত না থাকার ভুল দাবিও তোলা উচিৎ নয়।”
“সকল প্রতিষ্ঠানেই পক্ষপাতমূলক আচরণ বিদ্যমান। এর মধ্যে কয়েকটি স্পষ্টতই অন্যদের তুলনায় বেশি। আমি টুইটারে বিবিসি নিউজকে অনুসরণ করি, কারণ তারা সবচেয়ে কম পক্ষপাতমূলক সংস্থাগুলোর একটি।”
এই সংবাদ সংস্থার তহবিলের জন্য প্রতি বছর ব্রিটিশ নাগরিকরা একশ ৫৯ পাউন্ড (প্রায় দুইশ ডলার) করে আর্থিক ফি দিয়ে থাকেন। সংখ্যাটি সরকার নির্ধারণ করে দিলেও দেশটির বিভিন্ন পরিবার এগুলো পরিশোধ করে থাকে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিবিসি পরিচালিত হয় রাজকীয় সনদের অধীনে। আর এই সনদ সংস্থাটির লক্ষ্যমাত্রা ও উদ্দেশ্যের পাশাপাশি এর পরিচালনার কাঠামোও নির্ধারণ করে থাকে। এগুলো সবই যুক্তরাজ্যের সরকার থেকে আলাদা ও স্বাধীনভাবে কাজ করে।
পাশাপাশি, ‘বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস’ নামের পরিষেবা সমর্থনে দেশটির সরকার থেকে প্রতি বছর নয় কোটি পাউন্ড (১১ কোটি ১০ লাখ ডলার) আর্থিক তহবিল পায় সংবাদমাধ্যমটি। মূলত যুক্তরাজ্যের বাইরের দর্শকদের সংবাদ পরিষেবা দিয়ে থাকে এটি।
এই সম্প্রচারকের আর্থিক আয়ের বড় এক অংশ আসে বৈশ্বিকভাবে বিবিসি স্টুডিও’র বিভিন্ন কনটেন্ট বিক্রি করে ও যুক্তরাজ্যের বাইরের দর্শক এবং পাঠকদের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে।
টুইটার নিজেদের হেল্প পেইজে এই ‘সরকার ও রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট মিডিয়া অ্যাকাউন্ট’ লেবেল-এর বর্ণনা দিয়ে বলেছে: “রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট লেবেলগুলো সেইসব অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে বাড়তি প্রেক্ষাপট যুক্ত করে, যারা বিভিন্ন সরকারের নির্দিষ্ট আনুষ্ঠানিক প্রতিনিধি, রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম সংস্থা ও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়।”
গত সপ্তাহে মার্কিন সংবাদ সম্প্রচারক ‘এনপিআর’কে রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম হিসেবে আখ্যা দিয়েছে টুইটার। আর এটি সংবাদ সংস্থাটির বিভিন্ন টুইটার পেইজের পাশাপাশি রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা ‘আরটি’ ও চীনের ‘সিনহুয়া নিউজ’-এর মধ্যেও দেখা গেছে।
তবে এখন এনপিআর-এর লেবেল বদলে এতে বিবিসি’র টুইটার অ্যাকাউন্টের মতো ‘সরকারি তহবিলের গণমাধ্যম’-এর লেবেল যুক্ত হয়েছে।
এদিকে, ভেরিফাইড টিক চিহ্নের জন্য অর্থ প্রদানে অস্বীকৃতি জানানোর পর গত সপ্তাহে মার্কিন সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমসের ভেরিফাইড ব্যাজও কেড়ে নিয়েছে টুইটার।