হ্যাকিং ঠেকাতে বিভিন্ন দেশে ‘সাইবার ফোর্স পাঠাবে’ যুক্তরাষ্ট্র

তিন বছরে ২০টিরও বেশি দেশের আমন্ত্রণে এমন ৪৭টি প্রতিরক্ষামূলক ‘শিকার অভিযান’ পরিচালনা করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ‘সাইবার ন্যাশনাল মিশন ফোর্স’।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2023, 09:24 AM
Updated : 26 April 2023, 09:24 AM

বিভিন্ন দেশের সরকারকে হ্যাকিং কার্যক্রম ঠেকাতে সহায়তার জন্য আরও বেশি সাইবার যোদ্ধা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। 

ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান ফ্রান্সিসকোতে আয়োজিত ‘আরএসএ’ সাইবার নিরাপত্তা সম্মেলনে এ তথ্য জানান যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ এক সামরিক কর্মকর্তা।

সোমবার মার্কিন সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল উইলিয়াম হার্টম্যান বলেন, গত তিন বছরে ২০টিরও বেশি দেশের আমন্ত্রণে এমন ৪৭টি প্রতিরক্ষামূলক ‘শিকার অভিযান’ পরিচালনা করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ‘সাইবার ন্যাশনাল মিশন ফোর্স (সিএনএমএফ)’।

“এই ধরনের দাবি কেবল বাড়ছেই। আর এগুলো সব সময় একই রকম হয় না।” --সম্মেলনের এক পর্যায়ে এইসব অভিযান সম্পর্কে বলেন সিএনএমএফ-এর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা হার্টম্যান।

এই উদ্যোগ সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিদেশী মিত্রদের সঙ্গে মার্কিন সরকারের সম্পর্কোন্নয়নের এমন বড় এক উদাহরণ, যা প্রায়শই সীমানা ছাড়িয়ে যায়। উদাহরণ হিসেবে, কয়েকটি পরিচিত শীর্ষ র‍্যানসমওয়্যার অপরাধী দল যুক্তরাষ্ট্র’সহ একাধিক দেশকে নিজেদের শিকার বানিয়েছে।

হার্টম্যান বলেন, ইউক্রেইনে ৪৩ জন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিয়েছে সিএনএমএফ, যারা যুদ্ধচলাকালীন রাশিয়ার সাইবার আক্রমণ ঠেকানোর পেছনে কাজ করছে। এই চলমান যুদ্ধকে ‘বিশেষ অভিযান’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে রাশিয়া।

“এগুলো এমন প্রতিরক্ষা দল, যা আমরা পাঠাই। আর তারা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত প্রতিপক্ষ, এদের সরঞ্জাম ও বিভিন্ন সক্ষমতা খোঁজার কাজ করে থাকে।” --বলেন হার্টম্যান।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা ‘সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি (সিআইএসএ)’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে সিএনএমএফ।

সিআইএসএ’র নির্বাহী সহকারী পরিচালক এরিক গোল্ডস্টাইন বলেন, এর আগে উভয় সংস্থাই বিদেশী প্রতিপক্ষের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ফেডারেল সংস্থার বিরুদ্ধে পরিচালিত আক্রমণ ঠেকাতে সহায়তা করেছে।

“সংস্থাগুলোকে অবহিত করা, তাদের নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি আমরা  এইসব ঘটনার প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছি। একইসঙ্গে আমরা প্রতিপক্ষের অবকাঠামোর সকল তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি সেগুলো সিএনএমএফ-এর সঙ্গে শেয়ার করেছি।”

তবে এই বিষয়ে বাড়তি কোনো তথ্য দিতে রাজী হননি গোল্ডস্টাইন ও হার্টম্যান।

সম্মেলনে এক যৌথ উপস্থাপনা চলাকালীন সংস্থাগুলো পৃথক এক ঘটনা প্রকাশ করে, যার সঙ্গে ইরানের এক হ্যাকিং দল জড়িত ছিল। ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফলের তথ্য সংগ্রহের জন্য হ্যাকার দলটি যুক্তরাষ্ট্রের এক শহরের ভোটিং সিস্টেমে প্রবেশ করেছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।

হার্টম্যান বলেন, সে সময় সিএমএনএফ এই ভয়ে ছিল যে হ্যাকাররা সিস্টেমের ওয়েবসাইট এমন করে ফেলতে পারে, যাতে মনে হবে ভোটে কারচুপি হয়েছে। তবে, পরবর্তীতে সংস্থাটি ওই প্রবেশাধিকার সরিয়ে ফেলে।

“নির্বাচনের কোনো অবকাঠামতেই এটি প্রভাব ফেলতে পারেনি।” --যোগ করেন গোল্ডস্টাইন।

“আমরা একে এমন এক মডেল বানাতে চাই, যেখানে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত প্রমাণাদি খুঁজে সেগুলো সিএনএমএফ-এর কাছে হস্তান্তর করা হবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন তাদের ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’।